জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক এবং কিশোরগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি বাদল রহমানের (৬২) লাশ পাওয়া গেছে। গতকাল সকালে কিশোরগঞ্জ শহরের চর শোলাকিয়া এলাকার বেপারিবাড়ির পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। তবে তার পরিবার এটিকে হত্যাকান্ড বলে দাবি করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকাল ৭টার দিকে রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে পাশের পুকুরে একটি লাশ দেখতে পাওয়া যায়। পরে পুলিশকে জানানো হয়। চর শোলাকিয়া বেপারিবাড়ির পাশের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম জানান, সকাল ৭টার দিকে সন্তানকে মাদরাসায় দিয়ে ফেরার সময় পুকুরে লাশটি দেখতে পাই। এরই মধ্যে আরও অনেকেই ঘটনাস্থলে জড়ো হন। পৌনে ৯টার দিকে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে। এ রাস্তায় এর আগে বাদল রহমানকে কখনো হাঁটতে দেখেননি বলেও জানান তিনি। বাদল রহমানের স্ত্রী আয়শা আহমেদ জানান, শনিবার রাত ৮টার দিকে বাসা থেকে বের হন তার স্বামী। রাত ১১টার দিকে তার মোবাইল ফোনে কল করেও পাননি। পরে ভেবেছেন ছেলেদের বাসায় গেছেন। এই ভেবে রাতে আর খোঁজ করেননি। বাদল রহমানের বড় ভাই আতাউর রহমান খান মিলন জানান, তার ভাই ছিলেন উদার মনের মানুষ। অকাতরে মানুষকে দান করতেন। তার কোনো শত্রু ছিল বলে জানা নেই। তবে গোপন শত্রু থাকতেও পারে। যে অবস্থায় তার লাশ পাওয়া গেছে, এটিকে হত্যাকান্ড বলে দাবি করেন তিনি। কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, ‘সকাল পৌনে ৯টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় উপুড় হয়ে থাকা লাশটি দেখতে পাই। লাশ উল্টে চেহারা দেখে এটি বাদল রহমানের বলে শনাক্ত করি। তার পকেটে চশমা, মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ পাওয়া গেছে। মানিব্যাগের ভিতর ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড দেখে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায় লাশটি বাদল রহমানেরই। তার গায়ে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে ওসি জানান। প্রাথমিক অবস্থায় তার মৃত্যুর কোনো কারণ জানাতে পারেননি তিনি। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যেতে পারে।’ এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ আফজল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বাদল রহমান কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়নের ধিরুয়াইল গ্রামের মুখলেছুর রহমান খান বাদশা মিয়ার ছেলে। তিনি কিশোরগঞ্জ শহরের নীলগঞ্জ সড়কের খড়মপট্টির একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। তার দুই ছেলে শহরের বেগম রোকেয়া সড়কের উকিলপাড়া এলাকায় নিজ বাসায় থাকেন। প্রায় তিন বছর আগে প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর চলতি বছর ৩ মে রাজধানীর ওয়ারীর বাসিন্দা আয়শা আহমেদকে বিয়ে করেন বাদল রহমান।