শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১১ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

দিল্লিতে দীর্ঘ বৈঠক

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা

গৌতম লাহিড়ী, নয়াদিল্লি

দিল্লিতে দীর্ঘ বৈঠক

ভারত সফররত মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া গতকাল পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করলেন। বৈঠকের পর উজরা এক বিবৃতিতে জানিয়েচ্ছেন, ‘পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে ভারত-আমেরিকা অংশীদারি নিয়ে সফল আলোচনার জন্য সন্তোষ প্রকাশ করছি।’ তিনি নির্দিষ্ট কোনো রাষ্ট্রের নাম না করে বলেন, ‘মুক্ত অবাধ ভারত মহাসাগরীয় করার উদ্যোগে অভিন্ন নীতিতে আলোচনা হয়েছে। আঞ্চলিক স্থায়িত্ব এবং নাগরিক নিরাপত্তা বিষয়েও অভিন্ন নীতি নিয়ে কথা হয়েছে।’ উজরা জেয়া যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত। কিন্তু তাঁর বিবৃতিতে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ের কোনো উল্লেখ নেই। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকের সময় আমেরিকার দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব বাণী রাও উপস্থিত ছিলেন। আমেরিকার প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী সচিব ডোনাল্ড লু, ভারতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেট্টি এবং আমেরিকার আর্থিক সহযোগিতা বিষয়ের সহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কাউর।

এ বৈঠকের পর উজরা বৈঠক করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম বিভাগের সচিব সঞ্জয় ভার্মার সঙ্গে। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘আমার নয়াদিল্লি সফরে পশ্চিম বিভাগের সচিবের সঙ্গে সফল আলোচনা হয়েছে। বিশ্বের এবং আঞ্চলিক বিষয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভারত-আমেরিকা সহযোগিতা নিরন্তর রাখার জন্য ধন্যবাদ। সর্বাপেক্ষা শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধশালী বিশ্বের জন্য আমাদের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলোর সহযোগিতা জরুরি।’ এ বৈঠকের প্রধান বিষয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিষয়ক এবং পশ্চিম ইউরোপের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি।

সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দলের পক্ষে বৈঠকের বিষয়ে জানানো হলেও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোনো বিবৃতি সন্ধ্যা পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এর আগে তিনি আমেরিকার ‘বৈচিত্র্য, সমতা, সুসংহত সবার অন্তর্ভুক্তি ও অবাধ সুযোগ পাওয়ার’ বিষয়ের কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন দিল্লির দূতাবাসে। তার আগে দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত এবং অন্য কূটনৈতিক অফিসারদের সঙ্গে প্রাতরাশ বৈঠক করেন।

দিল্লি পৌঁছেই তিনি জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকের সফল অগ্রগতি করতেই তাঁর ভারত সফর। তিনি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দিল্লি থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন। স্বভাবতই তাঁর এই সফর নিয়ে বাংলাদেশে প্রচুর কৌতূহল রয়েছে। বিশেষ করে তিনি নিজেই বলেছিলেন বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন অবাধ করার জন্য কথা বলবেন। দিল্লিতে এ বিষয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না তা সম্পর্কে দিল্লি ও ওয়াশিংটন কিছুই জানায়নি। সরকারি সূত্রের মতে, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পর্যালোচনার সময়ে আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। এ ছাড়া আগামী নভেম্বরে ভারত মহাসাগরের দেশগুলো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে সম্মেলন করবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাতে বাংলাদেশ আমন্ত্রিত হতে পারে।

তবে উজরার সফরে আরও একবার চীন-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। রবিবার উজরাসহ মার্কিন প্রতিনিধি দল তিব্বত ধর্মগুরু দালাই লামার সঙ্গে বৈঠকের পর দিল্লির চীন দূতাবাস প্রবল সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছে। চীন দূতাবাস থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে এটা চীনের সার্বভৌমত্বের প্রতি আঘাত। এই বিবৃতিতে চীনা দূতাবাস বলে- ‘কোনো বহিরাগতদের তিব্বতের বিষয়ে নাক গলানোর অধিকার নেই।’ এক সূত্র জানান, সারা দিনের বৈঠকে চীনের প্রসঙ্গ বারবার উঠে এসেছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের প্রভাব হ্রাস করতেই মার্কিন উদ্যোগ। তাঁরা এই উদ্যোগে এ অঞ্চলের সব দেশকে চায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর