সোমবার, ১৭ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিবন্ধন পাচ্ছে না নাগরিক ঐক্য গণ অধিকারসহ ১০ দল

প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত বিএনএম ও বিএসপি, নূর বললেন সরকার ও ইসির পতন ঘটিয়ে নিবন্ধন নেব

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুটি দলকে নিবন্ধন দিতে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে নেই আলোচিত নাগরিক ঐক্য, গণ অধিকার পরিষদের দুই পক্ষের কেউ বা জামায়াতে ইসলামী থেকে বের হয়ে গঠন করা এবি পার্টি। গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে কমিশন সভা শেষে এ বিষয়টি জানানো হয়।

নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দুটি দল প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছে। এখন গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। আপত্তি নিষ্পত্তি করে ২৬ জুলাইয়ের পর চূড়ান্ত করা হবে। দল দুটি হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। কেন্দ্রীয় কার্যালয়, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, মাঠ পর্যায়ে অফিস-কমিটির কার্যকারিতা, প্রয়োজনীয় তথ্য ও দলিল যাচাই, তদন্ত শেষে এ দুটি দল নির্বাচিত হয়েছে বলেও জানান ইসি সচিব। এসব দলের বিষয়ে কারও কোনো দাবি বা আপত্তি আছে কি না তা জানাতে ১০ দিন সময়ও দিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। জানানো হয়েছে, আপত্তি পেলে দুই পক্ষের শুনানি শেষে নিষ্পত্তি করা হবে। আর আপত্তি না পেলে নিবন্ধন বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করা হবে। ২০২২ সালের মে মাসে নতুন দলের নিবন্ধন আবেদন চায় ইসি। তিন মাসের সময় দিলেও তাতে সাড়া না পেয়ে অক্টোবর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। নির্ধারিত সময়ে শখানেক নতুন দল নিবন্ধন পেতে আবেদন করে। এর মধ্যে প্রাথমিক বাছাইয়ে ঝরে পড়ে ৮৭টি আবেদন, টিকে থাকে ১২টি দল। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সরেজমিন সে ১২ দলের তথ্য যাচাই করে নির্বাচন কমিশন। নিবন্ধনের জন্য বিবেচিত দুই দল ছাড়াও তারা এবি পার্টি, বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি (বিএইচপি), গণ অধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি-বিএসপি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মাইনোরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি), ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (বিএলডিপি) বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে। গত বছরের নভেম্বরে প্রাথমিক পর্যালোচনা শুরু হয় এবং চলতি বছরের এপ্রিলে মাঠ পর্যায়ে তদন্তে নামে কমিশন। দুই মাস ধরে সরেজমিন তদন্ত করেন কর্মকর্তারা। এ বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সংসদ নির্বাচন করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। এ লক্ষ্যে চলতি বছরের জুনের মধ্যে নতুন দলগুলোর নিবন্ধন কাজ শেষ করার কথা ছিল। তা পিছিয়ে মধ্য জুলাই পার হলো নিবন্ধন দেওয়ার কাজ। বর্তমানে ইসির কাছে নিবন্ধিত দল রয়েছে ৪২। সবশেষ আদালতের আদেশে নিবন্ধন পায় বাংলাদেশ জাসদ।

সরকার ও ইসির পতন ঘটিয়ে নিবন্ধন নেব : নূর : সরকার ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পতন ঘটিয়ে নিবন্ধন নিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন গণ অধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক নুরুল হক নূর। মূলত সরকার ও এজেন্সির পরামর্শে গণ অধিকার পরিষদকে ইসি নিবন্ধন দেয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। নূর বলেন, দলগুলোর নিবন্ধনে যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক একজন উপসচিব ও অতিরিক্ত জেলা জজ। যিনি আইনকানুন সম্পর্কে ভালো বোঝেন। তার সঙ্গে কথা বলে দেখুন তিনি কী তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদনের কপিও আমাদের হাতে রয়েছে। তিনি অত্যন্ত সুন্দরভাবে লিখে দিয়েছেন, গণ অধিকার কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তারা নিবন্ধনের যোগ্য, এটা তদন্ত কমিটি লিখেছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সরকার ও এজেন্সির পরামর্শে আমাদের নিবন্ধন দেয়নি। নিবন্ধন দেয়নি ভালো, তবে আমরা এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পতন ঘটিয়েই আগামী নির্বাচনের আগে নিবন্ধন নেব এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণও করব।

সর্বশেষ খবর