মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
ড. ইফতেখারুজ্জামান

মানি লন্ডারিং বিষয়ে দুদকের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

মানি লন্ডারিং বিষয়ে দুদকের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিন

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে যে ২৭ ধরনের অপরাধের তদন্ত ও অনুসন্ধান দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে ন্যস্ত ছিল, সেগুলো পুনরায় দুদকের এখতিয়ারভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ২০১২ সালে প্রণীত মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৫ সালে সংশোধিত মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন এবং ২০১৯-এর তফসিল জরুরিভিত্তিতে সংশোধন করে দুদককে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে। ট্রাসপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘টিআইবির গবেষণানির্ভর ধারাবাহিক অধিপরামর্শমূলক কার্যক্রমের বহুবিধ সাফল্যের অন্যতম দৃষ্টান্ত হিসেবে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, যদিও এর কার্যকারিতার ঘাটতি নিয়ে টিআইবির উদ্বেগ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ অনুযায়ী দুদককে ২৭ ধরনের সম্পৃক্ত অপরাধ তদন্ত ও অনুসন্ধানের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০১৫ সালে তা সংশোধন করা হয়। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-২০১৯-এর তফসিলে শুধু ঘুষ ও দুর্নীতি ছাড়া বাকি ২৬টি অপরাধ-সংশ্লিষ্ট মানি লন্ডারিং অনুসন্ধান ও তদন্তের দায়িত্ব দুদকের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নির্ভরযোগ্য সূত্রে আমরা জেনেছি যে, দুদকের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ সংক্রান্ত আইনি সংশোধনের একটি উদ্যোগ চলমান আছে, যা ইতিবাচক। এ প্রক্রিয়া অবিলম্বে চূড়ান্ত করে জরুরিভিত্তিতে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২-এর ২(ঠ) ধারা সংশোধন করতে হবে। পাশাপাশি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-২০১৯-এর তফসিলে বর্ণিত অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য নির্ধারিত সংস্থার তালিকাক্রমের ৩, ৫, ৬, ১৪, ১৮, ১৯ ও ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধন করতে হবে। দলিল-দস্তাবেজ জালকরণ, প্রতারণা, জালিয়াতি, দেশি ও বিদেশি অর্থ পাচার, চোরাচালানি ও শুল্ক-সংক্রান্ত অপরাধ, কর-সংক্রান্ত অপরাধ এবং পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত অপরাধ (ইনসাইডার ট্রেডিং অ্যান্ড মার্কেট ম্যানিপুলেশন) থেকে উদ্ভূত মানি লন্ডারিং বা অর্থ পাচার-সংক্রান্ত সব অপরাধ অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি দুদকের এখতিয়ারভুক্ত করার লক্ষ্যে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-২০১৯ তফসিলসহ সংশোধন করতে হবে। টিআইবি মনে করে, আইনটির উল্লিখিত সংশোধনের সময় টিআইবির উদ্বেগ আমলে না নিয়ে শুধু দুদকের ক্ষমতা হ্রাসই করা হয়নি, বরং এর মধ্য দিয়ে মানি লন্ডারিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের অবস্থান ও পরিচয়ভেদে সুরক্ষা প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। অবিলম্বে পুনরায় আইনটির বিধিমালা ও তফসিলসহ সংশোধন করে উল্লিখিত অপরাধ-সংশ্লিষ্ট মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধকেও জরুরিভিত্তিতে দুদকের তফসিলভুক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি। একই সঙ্গে অর্থ পাচারসহ সব ধরনের দুর্নীতির প্রতিরোধ ও প্রতিকারে কারও প্রতি অনুকম্পা বা ভয়ের ঊর্ধ্বে থেকে ব্যক্তির পরিচয় ও অবস্থান নির্বিশেষে আইনানুগভাবে সৎসাহস ও দৃঢ়তার সঙ্গে নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধাচার নিশ্চিত করে অর্পিত দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হওয়ার জন্য দুদকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।

সর্বশেষ খবর