মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

শিক্ষকদের ওপর লাঠিচার্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষকদের ওপর লাঠিচার্জ

রাজধানীতে শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। গতকাল সন্ধ্যায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদফতরের মহাপরিচালকের (ডিজির) সঙ্গে বৈঠকেও আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা আসেনি। তাই আজও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলন করবেন এই শিক্ষকরা। দেশের বিভিন্ন জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে জাতীয়করণ দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে শিক্ষকরা বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে রাজপথের আন্দোলনে সরব রয়েছেন। সারা দেশ থেকে কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।

গতকাল সকাল ৮টা থেকেই শিক্ষকরা প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন। সকাল ১০টার মধ্যে প্রেস ক্লাবের সামনের পল্টন মোড় থেকে হাই কোর্ট মোড়গামী রাস্তা অবরোধ করে রাস্তায় বসে পড়েন শিক্ষকরা। তাদের মুহুর্মুহু স্লোগান শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকলে বেলা ১১টায় প্রেস ক্লাবের সামনের উভয় রাস্তাই বন্ধ করে দেন শিক্ষকরা। এভাবেই চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এই সড়ক বন্ধ হওয়ায় আশপাশের কয়েক এলাকায় যানজট শুরু হয়, শুরু হয় যানবাহনের দীর্ঘ সারি, ভোগান্তি। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হাই কোর্ট মোড় থেকে পল্টন মোড়গামী সড়ক ফাঁকা করতে গেলে ধ্বস্তাধ্বস্তি হয় শিক্ষকদের সঙ্গে। এ সময় কয়েকজন আন্দোলনকারীকে ইট ছুড়তেও দেখা যায়। শিক্ষক নেতারা দাবি করেন, পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করলে কয়েক শিক্ষক আহত হয়েছেন। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষক সংগঠন বিটিএর সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকদের কেউই বাংলাদেশ প্রতিদিনকে আহত শিক্ষকদের নাম জানাতে পারেননি। এরপর বিকাল ৩টায় হাই কোর্ট মোড় থেকে পল্টন মোড়গামী সড়ক যান চলাচলের জন্য ফাঁকা করে দিয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা। বিকালে মাউশি মহাপরিচালকের আহ্বানে বৈঠকে অংশ নিতে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মাউশিতে আসেন। বিকাল সাড়ে ৫টায় শুরু হওয়া এ বৈঠক শেষ হয় সন্ধ্যা পৌনে ৭টায়। বৈঠকে মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী ছাড়াও অন্যরা অংশ নেন। আর আন্দোলনকারী শিক্ষকদের পক্ষে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি বজলুর রহমান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেনসহ অন্যরা অংশ নেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে আন্দোলনকারী শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি বজলুর রহমান মিয়া বলেন, মাউশি ডিজিসহ অন্যরা আমাদের জানিয়েছেন বর্তমানে শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষাসচিব অসুস্থ। তবে মাউশির পক্ষ থেকে আমাদের দাবির বিষয়টি মন্ত্রীকে জানানো হবে। এরপর মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত জানা যাবে।

তিনি বলেন, যেহেতু আমরা সুস্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি তাই আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, মাউশি ডিজির কাছে আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরেছি। মাউশি ডিজিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা গুরুত্ব দিয়ে আমাদের কথা শুনেছেন। তারা আমাদের দাবি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরার আশ্বাস দিয়েছেন। আলোচনা শুরু হলো। মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বৈঠক শেষে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষকদের ডেকে তাদের দাবির বিষয়টি শুনেছি। দাবির বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে অবহিত করব। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে আন্দোলন প্রত্যাহার করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে শিক্ষকদের অনুরোধ করেছি আমি।

সর্বশেষ খবর