বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিএনপির পতনযাত্রা শুরু হয়েছে : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির পতনযাত্রা শুরু হয়েছে : কাদের

বিএনপির পদযাত্রাকে ‘পতনযাত্রা’ বলে অভিহিত করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তাদের (বিএনপির) এ পদযাত্রা পরাজয়ের যাত্রা। তাদের পদযাত্রায় পতনযাত্রা শুরু হয়েছে। রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে গতকাল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাংগঠনিক শক্তি দেখাচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। গতকাল পদযাত্রা করে বিএনপি। শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে শান্তি সমাবেশে দলটির কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন। শোভাযাত্রা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্সল্যাবের মোড় দিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে গিয়ে শেষ হয়। রাজধানী ছাড়াও এদিন রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের প্রতিটি জেলা ও মহানগরে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার প্রতিনিধি দলের কাছ থেকে বিএনপি কী পেয়েছে- এ প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা আপনাদের (বিএনপি) কী দিয়ে গেছে? তত্ত্বাবধায়ক দিয়ে গেছে? শেখ হাসিনার পদত্যাগ দিয়ে গেছে? তাদের কাছে দাবি করেছেন, কী দিয়ে গেছে? কী পেয়েছেন? হাঁসের ডিম আর ঘোড়ার ডিম পেয়েছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সংসদ বিলুপ্ত হবে না। শেখ হাসিনার পদত্যাগের প্রশ্নই ওঠে না। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। তারা (বিএনপি) মনে করছে, ২০০১ সালের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাদের ক্ষমতায় দিয়ে যাবে। তাদের আশার গুড়ে বালি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমরা বিলুপ্ত করিনি। উচ্চ আদালত এটা বাতিল করেছেন।

দলীয় নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে, সন্ত্রাসী কার্যক্রম করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে। এ বিষয়ে নিজেরা (দলীয় নেতা-কর্মী) কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। এটা দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত। আমরা গায়ে পড়ে কারও সঙ্গে গোলমাল করব না। আমরা বিজয়ী হব। তারা গায়ে পড়ে ঝগড়া বাধাবে। তাদের খালি কলসি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কলসি ভরা। কেউ সন্ত্রাস কার্যক্রম করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে। কেউ উসকানিতে কান দেবেন না। বিশৃঙ্খলা তারা করবে, যারা নির্বাচনে জিততে পারবে না। সামনে নির্বাচন। খুব সাবধানে পা ফেলতে হবে। কারও ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।

বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকার আওয়ামী লীগ মানে না মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের কথা একটাই- বাংলাদেশের সংবিধানে যা লেখা আছে, আমরা সেটাই করব। নির্বাচন কমিশন সংবিধান অনুসরণ করবে, বাস্তবায়ন করবে। এর বাইরে যত কিছুই করুক এক চুলও নড়ব না। যতই মারামারির চেষ্টা করেন কোনো লাভ হবে না। এ দেশে আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে। আমরা কারও কাছে মাথা নত করব না। বিএনপিকে বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের কথার কোনো ঠিক নেই। একবার বলে এক দফা আবার বলে ৩২ দফা। তারা রাষ্ট্র মেরামতের কথা বলে। মেরামত আপনাদের করতে হবে না। তারা (বিএনপি) বুঝে গেছে আগামী নির্বাচনে তাদের কোনো সম্ভাবনা নেই। তারা বুঝে গেছে গত নির্বাচনের মতো হবে তাদের অবস্থা।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি বিদ্যুতের নামে খাম্বা দিয়েছে। এ সরকারের আমলে দেশের মানুষ শতভাগ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবকিছু সুন্দরভাবে সামাল দিচ্ছেন। কিন্তু বিএনপি ঘোড়ার ডিম ছাড়া কিছুই দিতে পারবে না। এ সরকার পদ্মা সেতু দিয়েছে, মেট্রোরেল দিয়েছে, এক দিনে ১০০ সেতু উদ্বোধন করেছে। সামনের মাসে আরও কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন হবে। অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু টানেল প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন। এ সময় প্রশ্ন রেখে সেতুমন্ত্রী বলেন, ফখরুল সাহেব, আপনি কী দেখিয়ে নির্বাচন করবেন? তিনি বলেন, ফখরুল বলেছেন, আওয়ামী লীগ মাত্র ১০টা আসন পাবে। এখন বলছেন ৩০টা। তাকে ধন্যবাদ। তিনি আসন বাড়িয়েছেন। অথচ তারা এ কথা বলার পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ-সংখ্যক আসন পেয়েছেন। তাদের আন্দোলন ভুয়া। আমাদের তরুণরা যেভাবে মিছিলে নেমেছেন, তাতে বিএনপির কোনো উপায় নেই। যেসব তরুণ প্রথমবার ভোটার হয়েছেন, তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের যত শয়তানের দল আছে, সব শয়তানের দলের আসল ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। শয়তানের ৩৬ দল মিলিত হয়েছে। কদিন থাকবে? ছিল ৫৪ দল, নামতে নামতে সব মিলিয়ে ৩৬ দল। ওইদিন বলে ২৬, আবার বলে ৩৬। দফা একটা, আবার বলে ৩২টা। দফা আসলে কী। যাদের দফার ঠিক নেই, ঐক্যের ঠিক নেই। আজ এক ঐক্যজোট, কাল আরেক ঐক্যজোট।

সর্বশেষ খবর