বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

মন্ত্রণালয়ের কাজের সমন্বয়হীনতা দূর করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

মন্ত্রণালয়ের কাজের সমন্বয়হীনতা দূর করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজের সমন্বয়হীনতা দূর করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে প্রকল্পের কাজে যেন ওভারল্যাপিং না হয় সেই বিষয়েও সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেছেন তিনি।

গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির) সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর নানা নির্দেশনা উপস্থাপন করেন। সভায় ১৮ হাজার  কোটি টাকার ১৫টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী জানিয়েছেন। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের কাজ সমন্বয় করতে হবে। নির্দিষ্ট আইন মেনে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রকল্পের কাজের যেন ওভারল্যাপ না হয়। ওভারল্যাপিং হলে অপচয় হয়, অপচয় আমরা চাই না। এক প্রকল্পের কাজ এক মন্ত্রণালয়ের নয়, এতে অনেক মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত থাকতে পারে। সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। প্রকল্পের কাজ ওভারল্যাপিং হলে অর্থের অপচয় হয়। একই নামে যেন একাধিক প্রকল্প না আসে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজের সমন্বয়হীনতা দূর করতে হবে। যার যার প্রকল্প সে বাস্তবায়ন করবে, তবে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, উচ্চ আদালতে ট্যাক্স সংক্রান্ত অনেক মামলা পেন্ডিং আছে। আইন মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। কীভাবে এগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তি করা যায় সে বিষয়ে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। মৌসুমি সবজি ও ফল সংরক্ষণের প্রকল্প নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের চমৎকার ফসল হয়, এগুলোর জন্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ করতে হবে। কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রীকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

১৫ প্রকল্প অনুমোদন : অবকাঠামো উন্নয়নসহ ১৫টি প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ১০ কোটি ১২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ১৯২ কোটি ৭ লাখ টাকা। এ ছাড়া বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৫ হাজার ২৩৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫৮৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘বড়পুকুরিয়া-বগুড়া-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি লাইন’ প্রকল্প, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফিল্ম সিটি প্রকল্প, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (এসএমইউ) স্থাপন প্রকল্প, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘জিনাই, ঘাঘট, বংশী এবং নাগদা নদীর প্রবাহ পুনরুদ্ধারের জন্য শুষ্ক মৌসুমে নদীর প্রবাহ নিশ্চিতকরণ, নৌপথের উন্নয়ন ও বন্যা ব্যবস্থাপনা প্রকল্প, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘উলিপুর (হেলিপ্যাড মোড়)-চিলমারী (গুনাইগাছ) সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘বেসরকারি ভবনসমূহের রেজিলিয়েন্সির (স্থিতিস্থাপকতা/সহনশীলতা) জন্য ডিজাইন এবং নির্মাণের গুণগত মান বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্প, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে সমন্বিত ও টেকসই পৌর পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প ও ‘আমার গ্রাম-আমার শহর : পাইলট গ্রাম উন্নয়ন প্রকল্প, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জন্য রেকর্ড ভবন নির্মাণ প্রকল্প, কৃষি মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলা সেচ উন্নয়ন প্রকল্প, ‘ডাবল লিফটিং পদ্ধতিতে পদ্মা নদীর পানি বরেন্দ্র এলাকায় সরবরাহ ও সেচ সম্প্রসারণ’ প্রকল্প এবং ‘টিস্যু কালচার ল্যাবরেটরি কাম হর্টিকালচার সেন্টার স্থাপন ও উন্নয়ন’ প্রকল্প। এ ছাড়া পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প ‘ভূমি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে উড়িরচর-নোয়াখালী ক্রস ড্যাম নির্মাণ’ প্রকল্প ও ‘চট্টগ্রাম জেলার সন্ধিপ উপজেলার পোল্ডার নং-৭২’-এর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের স্থায়ী পুনর্বাসনসহ ঢাল সংরক্ষণ’ প্রকল্প; এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ‘দেশের বিভিন্ন কৌশলগত স্থানে নতুন খাদ্য গুদাম ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ’ প্রকল্প।

সর্বশেষ খবর