বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে আওয়ামী লীগ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে আওয়ামী লীগ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা সরকারে আসার পর রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়ন করেছি। এ কারণে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করতে পেরেছি। কারণ, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর এবং শুদ্ধাচার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারে আসার পর রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা করেছিলাম। সেটা সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার পর আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করতে পেরেছি। যেটা লক্ষ্য স্থির করেছি, সেটা অর্জন করেছি। খুব কম দেশই এমনটা করতে পারে। একটা দেশকে সেই উন্নয়নের গতিতে নিয়ে যাওয়া কঠিন কাজ। সেটা আপনারা নৈতিকতার সঙ্গে করতে পেরেছেন বলেই আমরা মর্যাদা অর্জন করতে পেরেছি। তিনি বলেন, দেশের জনসংখ্যাও অনেক বেশি। আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদা নিয়ে এগিয়ে গেলে অসাধ্য সাধন করা যায়। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১-এর মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়া। সে লক্ষ্যেই এখন এগিয়ে যেতে হবে। তৃণমূল মানুষের অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে এখন আর মঙ্গার চিত্র দেখা যায় না। যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমরা উন্নতি করেছি। মানুষের জীবনমান উন্নত করাই আমাদের লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে বলেছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব, তা সফল করেছি। শতভাগ বিদ্যুতায়নের কথা বলেছি, তা করেছি। ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশের বাস্তবায়ন শুরু হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে, অর্থনীতির ওপর চাপ পড়েছে। তবু অন্যান্য দেশের চেয়ে আমাদের অর্থনীতি গতিশীল রয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের প্রধান হিসেবে আমার সঙ্গে যেন যোগাযোগ থাকে প্রতিটা মন্ত্রণালয়ের। আপনারা (সচিব) যারা মন্ত্রণালয়ে কাজ করেন, আপনাদের সঙ্গে যারা কাজ করে, তাদের সঙ্গে যেন আপনাদের যোগাযোগ থাকে এবং প্রতিটা কাজের যেন সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকে। কাজ বাস্তবায়নের চিত্রও যেন উঠে আসে। সেই চিন্তা থেকেই বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি পদ্ধতিটা গ্রহণ করেছি। আপনারা (সচিব) অনেক পরিশ্রম করছেন, তার ফল পাচ্ছেন। আপনারা যেখানেই যাচ্ছেন, মাথা উঁচু করে চলতে পারছেন। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়গুলো তাদের অন্যান্য অফিসের সঙ্গে এপিএ স্বাক্ষর করবে-যাতে (সরকারি অফিসগুলোতে) তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত যোগাযোগ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়। আমরা যদি এভাবে কাজ করতে পারি, তাহলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে পারব।  শেখ হাসিনা বলেন, যদি আমরা কাজের প্রতি আন্তরিকতা, আত্মসম্মানবোধ, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ও দুর্নীতি থেকে দূরে থাকতে পারি তাহলে যে কোনো কঠিন পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে, এমনকি অসম্ভবকেও সম্ভব করতে পারি। আজ আমাদের বাংলাদেশ এটা প্রমাণ করেছে। মন্ত্রণালয় ও বিভাগ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে এপিএ স্বাক্ষর করেছে। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের কাছ থেকে এপিএ গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে এপিএ বাস্তবায়ন এবং রেন্ডারিং পরিষেবায় তাদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য ২০২১-২২ অর্থবছরের এপিএ অ্যাওয়ার্ড এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরের সরকারি অফিস এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান করা হয়। সরকার প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট উভয় ধরনের দুর্যোগ কাটিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট দুর্যোগ আসতে পারে। আমরা সব ধরনের দুর্যোগ কাটিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। আমি এটা বিশ্বাস করি। অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। এ ছাড়া পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিৎ কর্মকার এবং জনপ্রশাসন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সত্যজিৎ কর্মকার ২০২২-২৩ সালের শুদ্ধাচার পুরস্কার পেয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০২১-২২ এর জন্য এপিএ বাস্তবায়নে প্রথম পুরস্কার, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং কৃষি মন্ত্রণালয় যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।

এপিএ বাস্তবায়নে চতুর্থ থেকে দশম স্থান অর্জনকারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলো- অর্থ বিভাগ, আইসিটি বিভাগ, আইএমইডি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ।

সর্বশেষ খবর