শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভয়ংকর রূপে ডেঙ্গু, মৃত্যু ১৯

♦ ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যুহার ♦ ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ১৭৯২ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভয়ংকর রূপে ডেঙ্গু, মৃত্যু ১৯

সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলেও ডেঙ্গু রোগীতে ঠাসা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই নাজুক হচ্ছে। হাসপাতাল ভরে উঠছে রোগীতে। প্রতিদিনই রেকর্ড ভাঙছে মৃত্যু। এ বছর আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যুহার গত ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা চলতি বছরে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। আগের দিন মারা গিয়েছিলেন ১৩ জন, যা ছিল ওই দিন পর্যন্ত এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৭৯২ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতি গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আক্রান্তের অনুপাতে মৃত্যুর হার ছিল ০.১৮ থেকে সর্বোচ্চ ০.৫০ শতাংশ। এবার ১৯ জুলাই পর্যন্ত মৃত্যুর হার ০.৫৭ ভাগ। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু। এ বছর ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৪৬ জন। চলতি মাসেই ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে আগের বছরগুলোয় ডেঙ্গুর দাপট ছিল মূলত ঢাকাকেন্দ্রিক। দেশের বড় বড় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলো ঢাকায় অবস্থিত হওয়ার পরও চিকিৎসা কার্যক্রমে বেগ পেতে হয়েছে। এ বছর ঢাকার বাইরেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসা নিয়ে জটিলতা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ৯২২ জন ঢাকা সিটিতে ও ৮৭০ জন ঢাকা সিটির বাইরে ভর্তি হয়েছেন। তবে এ সময়ে মারা যাওয়া ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জনই ঢাকায় ও দুজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা সিটির বাইরে। চলতি বছরে গতকাল পর্যন্ত ২৫ হাজার ৭৯২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালমুখী হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২০ হাজার ৯৪ জন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫ হাজার ৫৫২ জন। এ বছর ঢাকা সিটির হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন ১৬ হাজার ৩৯৮ জন এবং ঢাকা সিটির বাইরে ভর্তি হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯৪ জন। মৃত্যুর হার ঢাকা সিটিতে ০.৬৯ ভাগ ও ঢাকা সিটির বাইরে ০.৩৫ ভাগ। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সসীমার মানুষের। ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত হয়েছে পুরুষ, মারা গেছে বেশি নারী। গতকাল পর্যন্ত মারা যাওয়া ১৪৬ জনের মধ্যে ৮৩ জন নারী ও ৬৩ জন পুরুষ। দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হওয়ায় শিশুদের নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। দোকানগুলোয় মশা দূরে রাখার বিভিন্ন ক্রিম ও লোশনের বিক্রি বেড়েছে। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশেও উঠে আসছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। অভিযোগের তীর উঠছে সরকার ও জনপ্রতিনিধিদের দিকে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, মশা মারতে দৃশ্যমান কর্মসূচি দেখা যাচ্ছে না। যে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে, তাতে মশা মরছে না। মহামারি রূপ ধারণের আগেই একে নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

সর্বশেষ খবর