শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সন্তুষ্ট নন, আন্দোলন চলবে শিক্ষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে বেসরকারি শিক্ষকরা গতকাল নবম দিনের মতো বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের উভয় রাস্তা বন্ধ করে গতকাল দিনভর বিক্ষোভ করেন এই শিক্ষকরা। এরপর বিকালে শিক্ষামন্ত্রীর আহ্বানে বৈঠকে বসেন আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতারা। তবে বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় প্রেস ব্রিফিং করে শিক্ষকরা জানান, তারা শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তাই জাতীয়করণের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক কর্মচারীদের আন্দোলন চলবে। দেশের বিভিন্ন জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ করে জাতীয়করণ দাবিতে গত ১১ জুলাই থেকে শিক্ষকরা বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে আন্দোলনে সরব রয়েছেন। সারা দেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।

গত কয়েকদিনের মতো গতকালও সকাল ৮টা থেকেই শিক্ষকরা প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন। সকাল ৯টার মধ্যে প্রেস ক্লাবের সামনের পল্টন মোড় থেকে হাই কোর্ট মোড়গামী রাস্তা অবরোধ করে রাস্তায় বসে পড়েন। স্লোগান শুরু হয় মুহুর্মুহু। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকলে বেলা ১১টায় প্রেস ক্লাবের সামনের উভয় রাস্তাই বন্ধ করে দেন শিক্ষকরা। এভাবেই চলে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এই সড়ক বন্ধ হওয়ায় আশপাশের এলাকায় যানজট শুরু হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। এরপর বিকাল ৩টায় হাই কোর্ট মোড় থেকে পল্টন মোড়গামী সড়ক যান চলাচলের জন্য ফাঁকা করে দিয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল। বৈঠকে শিক্ষা উপমন্ত্রী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ অন্যরাও উপস্থিত ছিলেন। এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ সম্ভব নয়। তবে জাতীয়করণের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হবে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ নিয়ে দুটি কমিটি করার কথাও জানান শিক্ষামন্ত্রী। দীপু মনি আরও বলেন, ২০ জুলাই থেকে সারা দেশের সব স্কুল-কলেজ গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হওয়ার কথা ছিল। পাঠ্যসূচি অনুসারে ২০ জুলাই শুরু হয়ে ২ আগস্ট পর্যন্ত এ ছুটি চলার কথা। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের স্বার্থে গ্রীষ্মকালীন এই ছুটি বাতিল করা হলো। শীতের ছুটির সঙ্গে এ ছুটি সমন্বয় করা হবে। সংসদ নির্বাচনের কারণে আগামী নভেম্বরের মধ্যে স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষ করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সন্ধ্যা ৭টায় প্রেস ব্রিফিং করেন আন্দোলনকারী শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষামন্ত্রী আমাদের বৈঠকে ডেকেছেন। তবে মন্ত্রীর বক্তব্যে আন্দোলনরত শিক্ষকরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তাই জাতীয়করণ দাবিতে শিক্ষকদের এই আন্দোলন চলবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মাত্র ৫ মিনিট সাক্ষাৎ চাই আমরা। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর