শিরোনাম
শনিবার, ২২ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্বস্তি মিলছে না বাজারে

দাম চড়া বেশির ভাগ পণ্যের

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বাজারগুলোয় বিভিন্ন সবজি, আদা ও কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমেছে। এসব নিত্যপণ্যের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে বলে বিক্রেতারা জানান। সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন সবজি কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা ও আদা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছ আগের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এরকম চিত্র দেখা গেছে। ক্রেতারা জানান, সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মাছের সরবরাহ বাড়লেও এখনো চড়া দামে মাছ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। শনিরআখড়া বাজারে চাষের বড় তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ২৬০, মাঝারি ও ছোট ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় পাঙ্গাশ ২২০ থেকে ২৪০, ছোটগুলো ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাষের ছোট রুই ২৫০ থেকে ২৮০, ১ কেজি ওজনের ৩২০ থেকে ৩৪০, ২ কেজি ওজনের ৩৮০ থেকে  ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় সাইজের কাতলা ৪৫০ টাকা। শিং মাছ ৪০০ থেকে ৫০০, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০, টেংরা ৬৫০ থেকে ৭০০, মাঝারি চিংড়ি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বাজারের মাছ ব্যবসায়ী হানিফ মাহমুদ বলেন, ‘মাছের সরবরাহ আগের তুলনায় কিছুটা বাড়লেও দাম কমেনি। পাইকারি বাজারে দাম না কমলে খুচরায় কমবে না। বাড়তি দামেই মাছ কিনতে হয়েছে।’ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী দেওয়ান মাহমুদ বলেন, ‘ঈদের পর থেকে মাছবাজার চড়া। আগে যে মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি ছিল, এখন তা ৩৫০ টাকা। এতে স্বল্প আয়ের মানুষ খুব বিপদে পড়ে গেছে। জরুরি ভিত্তিতে বাজার নিয়ন্ত্রণ দরকার।’

বাজারে দুই সপ্তাহ ধরে মুরগির দাম কম। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৬৫ থেকে ১৭০ এবং সোনালি ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রায়েরবাগ বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী রাসেল খন্দকার বলেন, ‘আগের তুলনায় মুরগি এখন অনেকটাই কম দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরায় ব্রয়লার মুরগি ১৬৫ থেকে ১৭০, সোনালি ২৭০ টাকা কেজি।’ ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়।

রাজধানীর বাজারগুলোয় সবজির সরবরাহ বাড়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে বেশির ভাগ সবজির দাম কিছুটা কমেছে। শনিরআখড়া বাজারে দেখা যায়, বেগুন ৮০, ঢ্যাঁড়শ, চিচিঙ্গা, পটোল ৫০-৬০, কাঁচা মরিচ ২০০ থেকে ২৪০, পেঁপে ৫০, কাঁকরোল ৬০-৭০, কচুর ছড়া ৮০-৯০, করলা ৯০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চালকুমড়া প্রতিটি ৪০-৫০ ও লাউ ৫০-৬০ টাকা। বাজারে দেশি টম্যাটোর সরবরাহ নেই। আমদানি করা টম্যাটো প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু ৪০-৪৫ টাকা। দেশি পিঁয়াজ ৭০-৭৫, আমদানি করা পিঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকা। খোলা চিনি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। শনিরআখড়া কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেন বলেন, রাজধানীর বাজারগুলোয় আগের তুলনায় এখন সবজির সরবরাহ বেড়েছে। তাই বেশ কিছু সবজির দাম কমেছে। গত সপ্তাহে কোনো সবজিই ৬০ টাকা কেজির নিচে ছিল না। এখন অনেক সবজি ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি।

আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম জানান, চট্টগ্রামে মরিচের দাম কমে এলেও এ সপ্তাহে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে টম্যাটো আর মুরগি। এ ছাড়া প্রায় বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে দেশের বিভিন্ন স্থানের টম্যাটো ছিল, দামও কম ছিল। ১০০ থেকে ১২০ টাকা করে বিক্রি করেছি। এখন বাজারে টম্যাটোর দাম ২০০ টাকার ওপরে। দেশে সরবরাহ না থাকায় আমদানি করা টম্যাটোর দাম বেড়েছে। এর মধ্যে আনা-নেওয়ার খরচ আছে। তাই ২০০ টাকার নিচে বিক্রি করলে লোকসানে পড়তে হবে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১৫ দিন আগেও টম্যাটো বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকা কেজি দরে। সেই টম্যাটো এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। আলু, চিচিঙ্গা ৩০, পটোল ৩০-৪০, মিষ্টিকুমড়া ৩০-৩৫, লাউ ৩৫, কাঁকরোল ৪০, করলা ৬০ টাকা কেজি। এ ছাড়া রুই মাছ ২৫০ থেকে ৩০০, মৃগেল ২০০ থেকে ৩০০, কাতলা ২৫০ থেকে ৩৫০, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২৬০, পাঙ্গাশ ১৫০ থেকে ১৮০, লইট্টা ১৫০ থেকে ২০০, পোপা ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। চকবাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুরগির ছানার দাম বেড়েছে, তাই লেয়ার মুরগিরও দাম বাড়ছে। উৎপাদন না থাকায় দাম বাড়ছে। সামনে হয় তো আরও দাম বাড়তে পারে। এদিকে মুরগির মধ্যে লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায়। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা। এ সপ্তাহে কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে কেজিপ্রতি ২০ টাকা করে। গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর