রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভারতের সঙ্গে নাটকীয় টাই

ফারজানার সেঞ্চুরি, সিরিজ শেষ সমতায়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ভারতের সঙ্গে নাটকীয় টাই

শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ভরা ম্যাচটি জেতেনি কোনো দল। মারুফা আক্তারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে বাংলাদেশ-ভারত মহিলা দলের শ্বাসরুদ্ধকর ‘অলিখিত’ ফাইনালটি উত্তেজনা ছড়িয়ে শেষ পর্যন্ত ‘টাই’ হয়েছে। নিগার সুলতানার বাংলাদেশের ৪ উইকেটে ২২৫ রান টপকাতে হারমানপ্রীত কাউরের ভারত অলআউট হয়েছে ২২৫ রানে। শেষ ওয়ানডে ‘টাই’ হওয়ায় তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ জেতেনি কোনো দল। শেষ হয়েছে ১-১ ব্যবধানে। ডিএলএস মেথডে বাংলাদেশ প্রথম ওয়ানডে জিতেছিল ৪০ রানে। দ্বিতীয়টিতে ভারত জয় পায় ১০৮ রানে। টি-২০ সিরিজ সফরকারী ভারত জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। নাটকীয়তায় ভরা ‘টাই’ ম্যাচটি ফারজানা হক পিংকির জন্য স্পেশাল কিছু। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তিন অঙ্কের জাদুকরী ইনিংস খেলেন পিংকি। ১৬০ বলে ১০৭ রানের ইনিংস খেলা পিংকি সিরিজ সেরা হয়েছেন। পিংকি আরও একটি বিরল রেকর্ডের মালিক। টি-২০ ক্রিকেটেও তিনি সেঞ্চুরি করেন। ২০১৯ সালে মালদ্বীপের বিপক্ষে ৫৪ বলে ১১০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন পিংকি। তিনি বাংলাদেশের  একমাত্র ক্রিকেটার যিনি ওয়ানডে ও টি-২০তে সেঞ্চুরি করেছেন। দুই দল এখন পর্যন্ত পরস্পরের বিপক্ষে আটবার মুখোমুখি হয়েছে। ভারতের ৬ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় এক এবং আরেকটি টাই হয়েছে।           

টান টান উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচটি জিততে শেষ ১৮ বলে ভারতের দরকার ছিল ৯ রান। বাংলাদেশের প্রয়োজন ২ উইকেট। এমন সমীকরণের ম্যাচটি শেষ দিকে হঠাৎ করে সরল দোলকের পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকে। একবার হেলে পরে বাংলাদেশের দিকে। আরেকবার ভারতের দিকে। মাঠে উপস্থিত দর্শকদের মাঝে উত্তেজনা। উত্তেজনা দুই দলের ক্রিকেটারদের মাঝেও। দুই দলই প্রস্তুত সিরিজ জয়ের উৎসব করতে। শুধু সময়ের অপেক্ষা। এমন কঠিন সমীকরণে ম্যাচে নার্ভ ধরে রাখা কঠিন। ধরে রাখতে পারেননি ভারতের ¯েœহ রানা। ৪৮ ওভারের দ্বিতীয় বলে নাহিদা আক্তারের ঘূর্ণিতে বোকা বনে ফিরতি ক্যাচ দেন তিনি। ওই ওভারের চতুর্থ বলে ফের আঘাত হানেন নাহিদা। বাঁ-হাতি স্পিনার নাহিদা মাত্র তিন বলের ব্যবধানে তুলে নেন ভারতের দুই উইকেট। জমে ওঠে ম্যাচ। নাহিদার ওভার শেষে ম্যাচের সমীকরণ- ভারতের দরকার ১২ বলে ৯ রান, বাংলাদেশের চাই ১ উইকেট। ম্যাচ পুরোপুরি হেলে পরে নিগার বাহিনীর দিকে। কিন্তু ৪৯ ওভারে ভারতীয় টেল এন্ডার মেঘনা এক চারে ৬ রান তুলে ফের ভারতকে নিয়ন্ত্রণে বসায়। ম্যাচ গড়ায় শেষ ওভারে। টানটান উত্তেজনা। শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি। ওভারের প্রথম বলে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলে এক রান তুলে নেন দুই ভারতীয় ব্যাটার। ৫ বলে ২ রান। ওভারের দ্বিতীয় বলে জেমিমা রদ্রিগেজ দ্রুত সিঙ্গেল নিয়ে ম্যাচ টাই করে হাফ ছেড়ে বাঁচেন। ৪ বলে এক রান। নিগার সব ফিল্ডারদের দিয়ে ছাড়ার মতো ঘিরে ধরেন ভারতীয় দুই ব্যাটারকে, যেন সিঙ্গেল নিতে না পারেন। চাপের মুখে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে বল করেন মারুফা। মেঘনা খোঁচা মারেন। ব্যাটের বাইরের দিকে লেগে বল উইকেটরক্ষক নিগার সুলতানার গ্লাভসবন্দি হয়। হারা ম্যাচ ‘টাই’ হয়। উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ।

প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ২২৫ রান করে। যা ভারতের বিপক্ষে এবং ঘরের মাটিতে দলগত সর্বোচ্চ। পিংকি ১০৭ রানের ইনিংস খেলেন ১৬০ বলে ৭ চারে। আরেক ওপেনার শামীমা সুলতানা ৫২ রান করেন ৭৮ বলে ৫ চারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর