সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
মাহমুদুর রহমান মান্না

সমঝোতা না হলে সংঘাত অনিবার্য

শামীম আহমেদ

সমঝোতা না হলে সংঘাত অনিবার্য

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনীতি ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে। বিএনপিসহ সব বিরোধী দল মিলে এই সরকারের পদত্যাগ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য অনেকদিন ধরে আন্দোলন করছে। গত শনিবার বিএনপি তারুণ্যের সমাবেশের নামে যে বিশাল সমাবেশ করেছে, তাকে ঐতিহাসিক বলা যায়। আবার সব বিরোধী দল মিলে ২৭ তারিখ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ওই দিন আরও  লোক আসবে। অথচ, এই আন্দোলনের ব্যাপারে সরকারের মনোভাব এখন পর্যন্ত শুধু নেতিবাচকই নয়, রীতিমতো আক্রমণাত্মক। এর পরিণতি ভালো হবে না। সমঝোতা না হলে সংঘাত অনিবার্য। তাতে ধ্বংসযজ্ঞ হবে। রক্ত ঝরবে। দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে গণতন্ত্র মঞ্চের (রাজনৈতিক জোট) এই নেতা বলেন, সরকারের পদত্যাগ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে জনগণ একাট্টা হয়ে গেছে। এই দাবি মানতেই হবে। গত শনিবার বিএনপি যে সমাবেশ করল, এত বড় সমাবেশ আওয়ামী লীগ করতে পারবে? তারাই তো বড় পার্টি হিসেবে বিবেচিত হয়। আওয়ামী লীগের কত প্রাচীন ঐতিহ্য, সবকিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে। ২৭ তারিখের সমাবেশে আরও লোক আসবে। এতগুলো মানুষ যদি রাস্তায় নামে, কীভাবে ঠেকাবে? হতে পারে নির্বিচারে গুলি চালাবে। তাতে সংঘাত বাড়বে। তবুও ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এখন একটাই উপায়, তা হলো একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে এই সরকারের চলে যাওয়া। এভাবে তারা সম্মানের সঙ্গে ক্ষমতা ছাড়তে পারত। রাজনীতিতেও থাকতে পারত। জনগণ চাইলে পরবর্তীতে আবার ক্ষমতায় আসতে পারত। কিন্তু, তারা সেটা করছে না। ক্ষমতা এমন জিনিস নয় যে, তার জন্য দেশ ধ্বংস করে দিতে হবে। তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হলেই ভালো হয়।

তিনি বলেন, বিরোধী দলের আন্দোলনে যেভাবে জনসমাগম হচ্ছে, তাতে পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তা এখনই বলা যাচ্ছে না। গত শনিবার সব বিরোধী দল মিলে আগামী ২৭ তারিখ সমাবেশের যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তার পরে পরিস্থিতিটা একটু গম্ভীর হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। একই দিনে বিএনপি তারুণ্যের সমাবেশেও বিপুল জনসমাগম হয়েছে। তার মাত্র চার-পাঁচ দিনের মাথায় এমন একটা কর্মসূচি, অনেকেই মনে করছে বিএনপি বোধ হয় চূড়ান্ত আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাদের দলসহ ১০টি দলকে নিবন্ধন দিল না নির্বাচন কমিশন। অথচ, আমাদের নিবন্ধন পেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সবকিছুই ঠিক আছে। আমরা প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি সেটা নির্বাচন কমিশনই বলেছিল। পরবর্তীতে তারা আরও কিছু প্রশ্ন পাঠিয়েছিল। আমরা সেগুলোরও জবাব দিয়েছি। পরে তারা ভিজিট করেছে। অফিস আছে কিনা, সদস্য আছে কিনা, আমরা যাদের সমর্থক হিসেবে নাম দিয়েছি তারা আমাদের দল করে কিনা সেটা পরীক্ষা করতে চেয়েছে। সমর্থকদের পুলিশের মতো জেরা করেছে। কেন আমাদের সমর্থন করে তা জানতে চেয়েছে। এক দফা পূরণ হলে রাজনীতির চেহারা বদলে যাবে। তখন নতুন করে নিবন্ধনও হবে। আমাদের দাবির মধ্যে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের কথাও আছে। সেই কমিশনে নিবন্ধনের কোনো সমস্যা আমাদের হবে না।

সদ্য অনুষ্ঠিত ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের গায়ে হাত তোলার সমালোচনা করে এই রাজনীতিক বলেন, এখানে তো আাওয়ামী লীগের প্রার্থীর চেয়ে হিরো আলমকে বেশি হেভিওয়েট মনে হয়েছে। সরকারের তো উচিত ছিল হিরো আলমকে আরও বেশি নিরাপত্তা দেওয়া। উল্টো তার গায়ে হাত তোলা হলো। পুলিশের ভূমিকাও ছিল ন্যক্কারজনক। অদ্ভুত ঘটনা। যা ইচ্ছা তাই করছে। আওয়ামী লীগ এত বড় একটা দল, সেই দল যদি এত অনৈতিক আচরণ করে, এর প্রভাব তো সর্বত্র পড়বে।

সর্বশেষ খবর