বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
উত্তেজনার সমাবেশ পিছিয়ে কাল

শেরেবাংলা নগরে শান্তি সমাবেশ আওয়ামী লীগের

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেরেবাংলা নগরে শান্তি সমাবেশ আওয়ামী লীগের

দেশের বিভিন্ন স্থানে দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীতে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগের দুই সহযোগী ও এক ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন যুবলীগ, স্বেছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ। আজ এই সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল রাজধানীয় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে। কিন্তু পুলিশের অনুমতি না মেলায় তা একদিন পিছিয়ে আগামীকাল শুক্রবার বাদ জুমা শেরেবাংলা নগরে সাবেক বাণিজ্য মেলার মাঠে এই সমাবেশ হবে। এতে দল ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় দুই লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

একইদিন রাজধানীর প্রবেশদ্বারে সমাবেশ ও থানা এবং ওয়ার্ডে অবস্থান কর্মসূচির প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এসব কর্মসূচিতে বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো সহিংসতায় জড়ালে পাল্টা আঘাতেরও প্রস্তুতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সমাবেশ থেকে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত রাজনীতির মাঠ দখলের রাখার ঘোষণা আসবে।

এ প্রসঙ্গে আয়োজন সংগঠনের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেসবাউল হক সাচ্চু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আমরা রাজধানীর বায়তুল মোকারমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করতে চেয়েছিলাম। সে হিসেবে প্রস্তুতিও চলছে। আমরা মঞ্চও তৈরি করেছিলাম। কিন্তু দুপুরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আমাদের অনুমতি দেওয়া হবে না। সে জন্য আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম মাঠে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলাম। সেখানেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি মেলেনি। বাধ্য হয়ে সাবেক বাণিজ্য মেলার মাঠ গতকাল রাতে পরিদর্শন করি। এই মাঠে একটি মেলা চলায় খানাখন্দে ভরপুর। আজ বৃহস্পতিবার সমাবেশ করার উপযুক্ত নয়। সে কারণে আগামীকাল শুক্রবার বিকাল ৩টায় তিন সংগঠনের উদ্যোগে শান্তি সমাবেশ করব।’ আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, তারা চান সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। জনগণের ভোটে নির্বাচিতরাই সরকার গঠন করবে। এই হোক সব দলের অঙ্গীকার। কিন্তু সংবিধানকে উপেক্ষা করে কতিপয় রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ এসব রাজনৈতিক দলকে কোনোভাবেই অবৈধ উপায়ে ক্ষমতায় আসতে দেবে না। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত মোতাবেক আওয়ামী লীগ নির্বাচন পর্যন্ত কর্মসূচি দিয়ে কাজ করছে। এক্ষেত্রে কারা কোথায় কর্মসূচি দিল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ বিচলিত নয়। সুতরাং পাল্টা কর্মসূচির ভাবনা আমাদের নেই। তবে কেউ যদি আন্দোলনের নামে সহিংসতা করে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, তারা থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে আজ ভোর থেকে আগামীকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত সতর্ক অবস্থানে থাকবে। জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা থানা ও ওয়ার্ড নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছি যে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিতে। যদি কেউ অন্যায়ভাবে জনগণের ক্ষতি করতে আসে তাহলে তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে। ‘বিএনপির সমাবেশের পাল্টা সমাবেশ করছেন কি না’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। রাজনৈতিক দল হিসেবে সহাবস্থানে থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করব। সারা দেশে যে অন্যায়ভাবে আমার নেতা-কর্মীদের আহত করা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানাতেই আমাদের শান্তি সমাবেশ। ঢাকার অন্যতম প্রবেশদ্বার আবদুল্লাহপুর। ওই এলাকাতেও কড়া পাহারায় থাকবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

ঢাকার অন্যতম প্রবেশদ্বার যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ এলাকাতেও ভোর থেকে সতর্ক থাকবে আওয়ামী লীগ। ডেমরা থানার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান সজল বলেন, আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আগামীকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত ঢাকার প্রবেশ পথ ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-৫ নির্বাচনী এলাকার নেতা-কর্মীরা সতর্ক থাকবে। যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না বলেন, যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ এলাকা পরিবহনসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের বাস। এই এলাকার কোনো মানুষের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেদিক লক্ষ্য রেখে আমরা সতর্ক অবস্থানে থাকব। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ, মন্সীগঞ্জ, টঙ্গী, সাভার, ময়মনসিংহসহ রাজধানীর পাশর্^বর্তী এলাকাতেও শান্তি সমাবেশ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। সে অনুযায়ী এসব জায়গায় কর্মসূচি পালিত হবে বলে জানা গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর