বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

তিস্তা পানি চুক্তি দ্রুত করতে ভারতে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ

গৌতম লাহিড়ী, নয়াদিল্লি

ভারতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক স্থায়ী কমিটি অবিলম্বে তিস্তা পানি চুক্তি সম্পাদনের জন্য সর্বসম্মত সুপারিশ করেছে। কমিটি বলেছে, এতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও উন্নত হবে। কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপির পি পি চৌধুরী লোকসভা ও রাজ্যসভায় ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির পর্যালোচনা করে ২৫ জুলাই রিপোর্ট উত্থাপন করেন। তাতে এ সুপারিশ রয়েছে। রিপোর্টটি গতকাল প্রকাশিত হয়েছে। এই স্থায়ী কমিটিতে মোট ৩০ জন এমপি। এর মধ্যে শাসক বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস ও অন্যান্য দলের এমপি রয়েছেন। রয়েছেন সাবেক কংগ্রেস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম, বিজেপির স্বপন দাশগুপ্ত, তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো)। রিপোর্টে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিশদ মূল্যায়ন করা হয়েছে। বিশেষ অধ্যায় রয়েছে বাংলাদেশ বিষয়ে। রিপোর্টে লেখা হয়েছে, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বহু প্রতীক্ষিত তিস্তা পানি চুক্তি সম্পাদনে বিলম্ব বিষয়ে কমিটি অবহিত। কমিটি চায় ভারত সরকার এ বকেয়া সমস্যাটি সমাধানের জন্য দ্রুত উদ্যোগ নিক এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অর্থবহ আলোচনা শুরু করে ঐকমত্যে আসুক। আলোচনার ফলাফল কমিটিকে জানাতে হবে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিটি জানায়, ভারত সরকার এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করবে বলে জানিয়েছে। কমিটির রিপোর্টে ভারত সরকারের ঘোষিত নীতি উল্লেখ করে বলা হয়, ভারত সরকারের সর্বসম্মতি তৈরি হলেই তিস্তা পানি চুক্তি সম্পাদন করতে দায়বদ্ধ। কমিটি এও বলেছে, বর্তমানে চালু সহযোগিতা ছাড়াও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পানি বণ্টন, নিরাপত্তা, শান্তির উদ্দেশ্যে পরমাণু সহযোগিতা, মহাকাশ গবেষণায় সহযোগিতা এবং নতুন আধুনিক প্রযুক্তি। স্ট্যান্ডিং কমিটি চায়, এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন পরিকল্পনা তৈরি করে দুই দেশের সমৃদ্ধি বিকশিত করুক। বাণিজ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার এবং এশিয়ার মধ্যে বৃহত্তম সহযোগী। ২০২১-২২ সালের মধ্যেই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৬৮ শতাংশ বেড়েছে। ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ১৮ বিলিয়ন ডলার। ৩৬টি স্থলবন্দর ও চারটি সুসংহত চেকপোস্টের মাধ্যমে নাগরিক ও পণ্যের আদানপ্রদান হচ্ছে। কমিটি বিশেষভাবে উল্লেখ করে যে, ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে ১৩ বার সাক্ষাৎ হয়েছে। অন্য কোনো দেশের সঙ্গে এরকম সাক্ষাতের নজির নেই। বর্তমানে উভয় দেশের যৌথ উদ্যোগে সীমান্তে মাদকদ্রব্য পাচার, মানুষ ও শিশু পাচার, জাল নোট পাচার, দুর্নীতি নিরোধে এবং দুই দেশের নিরাপত্তা সংস্থার মধ্যে বোঝাপড়া অনেক নিবিড় হওয়ায় কমিটি খুবই সন্তোষ প্রকাশ করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর