শিরোনাম
শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

গণগ্রেফতার চলছে, অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির মহাসমাবেশ সামনে রেখে রাজধানীতে দলটির নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও পুলিশ বলছে, ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। বুধবার রাত থেকে রাজধানীজুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। রাতভর অভিযানে বিএনপির কয়েক শ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়। 

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কাছাকাছি হোটেল মিডওয়ে থেকে ৫০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীদের অনেকে মিডওয়ে ও পাশের ভিক্টোরিয়া হোটেলে উঠেছিলেন। সেখানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) রাজীব আল মাসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, হোটেল মিডওয়েতে অভিযান চালিয়ে অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির জন্য ওই হোটেলে জড়ো হয়েছিলেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, সমাবেশ সামনে রেখে রাজধানীতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করা হচ্ছে। তবে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। গতকাল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমানসহ মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা হাজারেরও বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিএনপি থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের জন্য হোটেল, মেস ও বাসাবাড়িতে রাতভর অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এখন পর্যন্ত গ্রেফতারের প্রকৃত সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। তবে এ সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেককে আটক করলেও সে সংখ্যা কত, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। ডিএমপির একটি সূত্র জানায়, বুধবার রাতে বিভিন্ন স্থান থেকে ৪১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে বিএনপির ৩৬৬ নেতা-কর্মী রয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার ৭৫ নেতা-কর্মীকে বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। জানা গেছে, মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১৯ নেতা-কর্মীকে বুধবার রাতে ঢাকার মিরপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করা হয়। ঢাকার কোতোয়ালি থানা পুলিশ মানিকগঞ্জের ঘিউর উপজেলা ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকে আটক করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর রহমান বলেন, পুরান ঢাকার বাবুবাজারে নিরাপত্তাচৌকিতে তল্লাশির সময় পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে তাদের আটক করা হয়। তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে ঢাকায় এসেছিলেন। রাজধানীর লালমাটিয়ার ডি ব্লকের বাসা থেকে বুধবার রাতে আবদুল কুদ্দুস আকন নামে বিএনপির এক নেতাকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছে। মোহাম্মদুর থানার ওসি মাহফুজুল হক ভূঁইয়া বলেন, রাতে মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে কিছু ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বিএনপির নেতা আবদুল কুদ্দুস আছে কি না, তা খোঁজ নিয়ে পরে জানানো যাবে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সহসভাপতি মীর আশরাফ আলী আজম এবং তার ছেলে ব্যারিস্টার মীর মুনতাহা আলীকে লালবাগের বাসা থেকে বুধবার গভীর রাতে ডিবি গ্রেফতার করে। মীর আশরাফ আলী আজমের স্ত্রী অভিযোগ করেন, গ্রেফতারের সময় পুলিশ পিটিয়ে তার স্বামীর পা ও কোমর ভেঙে ফেলেছে। তার ছেলে আইনজীবী পরিচয় দেওয়ার পর তাকেও ধরে নিয়ে গেছে। এ সময় তার পুত্রবধূর সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করা হয়। লালবাগ থানার ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, ডিবির লালবাগ বিভাগের সদস্যরা মীর আশরাফ আলীর বাসায় অভিযান চালান, এ সময় তিনি তিন তলার জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন, এতে তার পা ভেঙে যায়। আশরাফ আলী এখন পুলিশ পাহারায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সর্বশেষ খবর