শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

অভিন্ন কর্মসূচি বিএনপির সমমনা ৩৬ দলের

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিএনপি ঘোষিত মহাসমাবেশের সঙ্গে মিল রেখে গতকাল সমমনা দলগুলোও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে আলাদাভাবে এই কর্মসূচি পালন করে তারা। চলমান এক দফা আন্দোলনের প্রতি সংহতি ও সরকার পতনের দুই দফা আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ২৯ জুলাই ঢাকা মহানগরের প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলগুলো।

গণতন্ত্র মঞ্চ : সরকার পতনের এক দফা দাবির যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গণতন্ত্র মঞ্চ সমাবেশ করেছে।  বিকালে শিল্পকলা একাডেমির প্রবেশপথে সমাবেশ করে তারা। বক্তব্য রাখেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকারকে ভোট চোর বললে অসম্মান করা হয়, এই সরকার ‘ভোট ডাকাত’। জনস্রোত দেখে এই সরকার রাগের চোটে সমাবেশস্থলের ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেয়। সরকারের পতনের ঘণ্টা বেজে গেছে।

১২ দলীয় জোট : জোটের শীর্ষ নেতা জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আমরা ঘরে ফিরে যাব না। গতকাল বাদ জুমা রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে আয়োজিত মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদার পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীক, আহসান হাবিব লিংকন, শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ।

এলডিপি : সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, বর্তমান অবৈধ সরকার ছলেবলে কৌশলে বিভিন্ন অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করে দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতা দখল করে এদেশ শাসন করছে। সমগ্র দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তাই এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। এখন সময় তাদের বিদায় নেওয়ার। তাদের বিদায় নিতেই হবে। বিকালে রাজধানীর পূর্ব পান্থপথে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন নূরুল আলম চৌধুরী, নেয়ামূল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, এস এম মোরশেদ প্রমুখ।

গণঅধিকার পরিষদ (নূর) : সংগঠনের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেছেন, আন্দোলনের খেলা ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। বিএনপিসহ সব বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান থাকবে, আপনারা এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করুন। সরকারের কাঁপুনি ধরে গেছে। তাই তারা ইন্টারনেট বন্ধ করে দিচ্ছে, বাসে বাসে তল্লাশি চালাচ্ছে। গতকাল গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ের সামনে এক দফা দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। আরও বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান প্রমুখ।

লেবার পার্টি : সংগঠনের চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেছেন, এক দফা আদায়ে রাজপথে গণআন্দোলনের বিকল্প নেই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। বিকালে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির পাশে নির্দলীয় সরকারের একদফা দাবিতে আয়োজিত গণ-সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। আরও বক্তব্য রাখেন জহুরা খাতুন জুঁই, আলাউদ্দিন আলী, মোসলেম উদ্দিন প্রমুখ।

এনডিএম : সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ের যুগপৎ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘মুক্তির সমাবেশ’ করেছে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম। গতকাল রাজধানীর মালিবাগ মোড়ে অবস্থিত দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, এই স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় করতে মুখিয়ে থাকা জনতার প্রতিটি ঘরেই আজ মুক্তির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মেনে না নিলে জাগ্রত জনতা ঢাকার রাজপথ অচল করে  দেবে। আরও বক্তব্য রাখেন এনডিএম যুগ্ম মহাসচিব মোমিনুল আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন নুরুজ্জামান হীরা প্রমুখ। 

এবি পার্টি : দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, জনদাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন। জেদ এবং গোঁয়ার্তুমি করে আবারও একতরফা নির্বাচনের পথে যাবেন না। সে পথে গেলে পাপের বোঝা আরও ভারী করা ছাড়া অন্য কোনো লাভ হবে না। যত দেরি করবেন তত ভুল বেশি করবেন। দুপুরে বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয়-৭১ চত্বরে ‘প্রতিবাদী অবস্থান ও বিক্ষোভ’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। দলের সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আনোয়ার সাদাত টুটুলের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।

এনডিপি : এনডিপি সভাপতি কে এম আবু তাহের বলেছেন, এই সরকার দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সব কিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় রাস্তায় নেমেছি, সংবিধান সংশোধন করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা কায়েম না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থামবে না। বিজয়নগর পানির ট্যাংকি সংলগ্ন মোড়ে আয়োজিত সমাবেশে একথা বলেন তিনি। আরও বক্তব্য রাখেন এনডিপি মহাসচিব আবদুল্লাহ-আল-হারুন (সোহেল), প্রেসিডিয়াম সদস্য মিজানুর রহমান পাটোয়ারী, সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম হাওলাদার, যুগ্ম-মহাসচিব হাসানুজ্জামান সুমন প্রমুখ।

সমমনা জোট : সরকারের পদত্যাগ ছাড়া জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট রাজপথ ছাড়বে না বলে জানিয়েছেন জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। সকালে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকি সংলগ্ন আল রাজি কমপ্লেক্সের সামনে এক সমাবেশে তিনি একথা বলেন। বক্তব্য রাখেন জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী প্রমুখ।

গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি : গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, জনগণ রাজপথে নেমেছে, এই রাজপথ আর ছাড়বে না। কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে বিপ্লবী জনতা বিজয় অর্জন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। গতকাল মতিঝিলে গণফোরাম চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে একথা বলেন তিনি। আরও বক্তব্য রাখেন এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, আইয়ুব খান ফারুক প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর