মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
বিএনপির জনসমাবেশ

সোজা কথায় না হলে ফয়সালা হবে রাজপথে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোজা কথায় না হলে ফয়সালা হবে রাজপথে : ফখরুল

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গতকাল সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে বলেছেন, ‘আমরা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন চাই না, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। সোজা কথায় না হলে ফয়সালা হবে রাজপথে। আমরা বহুদূর এগিয়েছি। বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।’

গতকাল বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি সরকারকে উদ্দেশ করে আরও বলেন, ‘এখনো সময় আছে, অবিলম্বে এক দফা মেনে নিন। তা না হলে পালাবার পথটাও আর খুঁজে পাবেন না।’

শনিবার রাজধানীর প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের হামলা, গুলি ও গ্রেফতার-নির্যাতনের প্রতিবাদে গতকাল সারা দেশে মহানগর ও জেলা পর্যায়ে এ জনসমাবেশ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। রাজধানীর সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম। সমাবেশ পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগরী উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ। কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বিকাল ৩টায় জনসমাবেশ শুরু হয়। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগরী উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান প্রমুখ। সমাবেশ থেকে নতুন কোনো কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়নি। সমমনা দল ও জোটগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান মির্জা ফখরুল। তীব্র গরম উপেক্ষা করে দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হন। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘দফা এক দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ স্লোগানে মুখরিত ছিল মৎস্য ভবন, শাহবাগ, কাকরাইলসহ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা। বিএনপি মহাসচিব সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘এখনো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করেই সরকারের পতন ঘটানো হবে।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গয়েশ্বরচন্দ্র রায় ও আমান উল্লাহ আমানকে নিয়ে সরকার দুর্বল চিত্রনাট্য লিখেছে। তাদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানোর পর খাবার দিয়ে ভিডিও করে নেটে ছেড়ে দিয়েছে। মানুষ এখন আর এত বোকা না। সবই বোঝে। দেশের মানুষ একসঙ্গে জেগে উঠেছে। দাবি একটাই, সরকারের পদত্যাগ।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার এত ভীত যে ১ হাজার ২০০ লোককে গ্রেফতার করেছে। রবিবার রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি করেছে। গত ১৫ বছর এমন করে কি আটকাতে পেরেছে? গ্রেফতার করে এবার লাভ হবে না।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুক্র ও শনিবার বিএনপির গুগলিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বোল্ডআউট হয়ে গেছে। গুগলিতে ব্যাটসম্যান যেমন কিছু বুঝে ওঠার আগে বোল্ডআউট হয়ে যায়, বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচিতে (২৮ ও ২৯ জুলাই) আওয়ামী লীগের অবস্থা একই হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘শনিবার আমরা ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছিলাম। তাতেই তারা ভয় পেয়ে পুলিশ, জলকামান, সাঁজোয়া যান এবং আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। তারা আমাদের নেতা-কর্মীদের মেরেছে, গ্রেফতার করেছে এবং মামলা দিয়েছে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালিয়ে, গ্রেফতার করে লাভ হবে না। সবকিছুর শেষ আছে, হিসাব দিতে হবে। আমরা সংবিধানমতো আন্দোলন করছি, আমাদের আন্দোলনে বাধা দেবেন না। তাহলে পালাবার পথটাও আর খুঁজে পাবেন না।’

সর্বশেষ খবর