বুধবার, ২ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
হাওরে গ্রেফতার বুয়েটের শিক্ষার্থী

পুলিশ বলছে শিবির, অপরাধী নন দাবি স্বজনদের

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

সুনামগঞ্জে হাওরে ভ্রমণের সময় গ্রেফতার ৩৪ বুয়েট শিক্ষার্থী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এদিকে গ্রেফতার শিক্ষার্থীরা রাজনীতি বা রাষ্ট্রবিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত নয় উল্লেখ করে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তাদের অভিভাবকরা। গতকাল বুয়েট শহীদ মিনারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।

সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আটক ৩৪ শিক্ষার্থী জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, নিরাপত্তা বিঘ্নিত, জানমালের ক্ষতি সাধন, রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক সময়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তোলার লক্ষ্যে বুয়েট শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের বায়তুল মাল সম্পাদক আফিফ আনোয়ারের নেতৃত্বে একত্রিত তারা হয়েছিল। আটককৃতদের তল্লাশি করে ৩৩টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন, ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন কার্যক্রম সংক্রান্ত স্ক্রিনশর্ট, সংগঠনের কল্যাণ তহবিল সংক্রান্ত প্রচারপত্র, সদস্য ও সাথীদের পাঠযোগ্য কোরআন ও হাদিসের সিলেবাস, কর্মী ঘোষণা অনুষ্ঠান সংক্রান্ত স্ক্রিনশর্ট জব্দ করা হয়। এদিকে গ্রেফতার হওয়া শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বেশ কয়েকজন অভিভাবক। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গ্রেফতার শিক্ষার্থী আলী আম্মার মুয়াজের বড় ভাই আলী আহসান জুনায়েদ। তিনি বলেন, রাজনীতিসহ এ জাতীয় কোনো কাজের সঙ্গে তাদের (গ্রেফতার শিক্ষার্থী) সংশ্লিষ্টতা ছিল না কখনো। উপরন্তু, বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ। তারাও রাজনীতিমুক্ত হিসেবেই ছিল। তারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি বলেন, শনিবার আমাদের সন্তান/স্বজনরা ক্যাম্পাসের বন্ধুদের সঙ্গে সুনামগঞ্জের টাংগুয়ার হাওরে বেড়াতে যায়। রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে তাদের ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রায় ৩ ঘণ্টা পর রাত ১০টার দিকে তারা জানায়, পুলিশ হাওরে নৌকায় ভ্রমণের সময় জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে আটক করে তাদের তাহিরপুর থানায় নিয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আইডি কার্ডের নম্বর নেওয়ার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে। তারা ফোনে শুধু এটুকুই বলতে পেরেছে। বেশি আর কথা বলতে দেওয়া হয়নি, ফোন নিয়ে নেওয়া হয়। আমরা এরপর থেকে ওসি ও এসপিকে বারবার ফোন করেছি, কিন্তু তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি। অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, আদালতে তোলার সময় আইনজীবীদের তারা জানিয়েছে, কিছুই না পেয়ে তাদের সামনেই ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড দিয়ে জব্দ তালিকায় উল্লিখিত কাগজপত্র প্রিন্ট করা হয়েছে মামলা সাজানোর জন্য। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের দ্রুত জামিন ও মামলা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য বিচার বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে দাবি জানানো হয়।

 

সর্বশেষ খবর