বুধবার, ২ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

তারেক-জোবাইদার ফরমায়েশি সাজা হতে পারে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। সরকার এখন অন্য পথে হাঁটছে। তাদের ‘নীলনকশা’ অনুযায়ী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে ফরমায়েশি রায়ে সাজা দেওয়া হতে পারে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহে আশঙ্কা করছি যে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে সরকারি নীলনকশায় সাজা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। ঢাকার বিশেষ আদালতে চলমান এই মামলায় অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে সাক্ষী নিয়ে রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছে। দেশে লাখ লাখ মামলার জট থাকলেও এই মামলায় মাত্র ১৬ দিনে ৪২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। রাত ৮টা-৯টা পর্যন্ত একতরফাভাবে সাক্ষী নেওয়া হয়েছে। অথচ তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে এই মামলা চলার মতো কোনো আইনগত উপাদান নেই। তিনি বলেন, তারেক রহমানের সম্পদ বিবরণী ২০০৭ সালে জমা দেওয়া হয়েছিল, সেই সম্পদের পুরো আয়কর জমা দেওয়া হয়েছিল। জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে, ৩৫ লাখ টাকার এফডিআর। কিন্তু মামলা করার আগের অর্থবছরে ওই এফডিআরের ট্যাক্স রিটার্ন দেওয়া হয়েছিল। বিএনপির এই মুখপাত্র অভিযোগ করে বলেন, বিচারের নামে ‘ক্যামেরা ট্রায়াল’ চালানো হয়েছে। আমাদের আইনজীবীরা এ ধরনের বিচারকাজের বৈধতা বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করতে গেলে তাদের ওপর পুলিশ ও সরকারদলীয় আইনজীবীরা একাধিকবার হামলা চালিয়েছেন। তাদের আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার বিএনপির সিনিয়র নেতাদের একটি তালিকা করেছে। তাদের মামলা দ্রুত শেষ করতে চিঠিও দেওয়া হয়েছে যাতে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন। ইতোমধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমানকেও সাজা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান আখ্যা দিয়ে বলেন, দুদক এখন ‘বিরোধীদল দমন কমিশনে’ পরিণত হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলার রায়ে সাজা হলেও চলমান আন্দোলনে তা কোনো প্রভাব ফেলবে না। এসব রায় দিয়ে কিছুই হবে না, কারণ জনগণ সব বুজে গেছে। সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জোবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরের বছর তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। গত ১৩ এপ্রিল তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগ গঠন করে আদালত। মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ ২ আগস্ট মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।

সর্বশেষ খবর