সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিলমারা ঠেকাতে ভোরে যাবে ব্যালট

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিলমারা ঠেকাতে ভোরে যাবে ব্যালট

ইসি আলমগীর

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটের দিন খুব ভোরেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানোর চিন্তাভাবনা করছে নির্বাচন কমিশন। যেসব কেন্দ্রে পৌঁছাতে যোগাযোগব্যবস্থা খারাপ, ভোরে পাঠানো সম্ভব না হলে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আগের রাতেই পাঠাতে চায় সাংবিধানিক সংস্থাটি। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘আমরা যতগুলো নির্বাচন ব্যালটে করেছি, ব্যালট পেপার সকালে পাঠানো হয়েছে। আমরা জাতীয়                নির্বাচনের ক্ষেত্রেও এ ধরনের হয়তো চিন্তাভাবনা হতে পারে।’ এ বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ভোট করার পরিকল্পনা করছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন।

ব্যালট পেপারের ‘অপব্যবহার’ ঠেকাতে সংসদ নির্বাচনেও কিছু কৌশল নেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এবারও ব্যালট পেপারে নির্বাচন হবে। আগেও যেভাবে এগুলো হয়েছে এবারও সেভাবেই হবে। ব্যালটে নির্বাচনে যাতে কোনো রকম অপব্যবহার না হতে পারে সে জন্য আমাদের কিছু কৌশল আছে, সেগুলো আমরা প্রয়োগ করার চেষ্টা করব।’ যোগাযোগ ব্যবস্থার বিবেচনা করেই ব্যালট পেপার পাঠানোর সময় নির্ধারণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে কমিশন। উদাহরণ টেনে এ কমিশনার জানান, বর্তমান দায়িত্ব নেওয়ার পরে নির্বাচনের দিন সকালে ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে। ‘ব্যালট পেপার ভোটের দিন সকালে পাঠাই। যদি না যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক থেকে বাজে অবস্থা না থাকে বা উন্নত না হয়। তো এ ধরনের ক্ষেত্রে একটু আগে পাঠাই। যোগাযোগ যেখানে ভালো, ভোট ৪টায় (পাঠানো) শুরু করলে ভোট শুরু হওয়ার আগেই পৌঁছাতে পারবে সে সব কেন্দ্রে আমরা সকালে ব্যালট পাঠাই।’

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে চিন্তাভাবনা তুলে ধরে মো. আলমগীর বলেন, ‘যতগুলো নির্বাচন ব্যালটে করেছি, ব্যালট এভাবেই সকালে পাঠানো হয়েছে। আমরা জাতীয় নির্বাচনে ক্ষেত্রেও এ ধরনের হয়তো চিন্তাভাবনা হতে পারে। যেগুলোতে সকালে ব্যালট পেপার পাঠানো সম্ভব সেগুলোকে কেন্দ্র চিহ্নিত করা এবং যেখানে পাঠানো সম্ভব নয়, যোগাযোগ উন্নত নেই, সেখানে আমরা বিশেষ ব্যবস্থায় রাতে ব্যালট পেপার পাঠাব। যাবে কোনো রকম পথে যেন মিসইউজ বা ছিনতাই না হতে পারে।’

সিসি ক্যামেরা চিন্তাভাবনা নেই : জাতীয় নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের বিষয়ে কোনো চিন্তাভাবনা নেই বলে জানান এ নির্বাচন কমিশনার। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নিরাপত্তা সদস্য বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। মো. আলমগীর তিনি বলেন, ‘(ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের) এ বিষয়টি আমাদের মধ্যে আলোচনাও হয় নাই তেমন। ফরমাল কোনো আলোচনা হয়নি। চিন্তা ভাবনা নেই। কারণ জানেন যে ৩০০ আসনে যখন ভোট হয় ৪ লাখ কেন্দ্র থাকে। সেখানে এত হয়তো বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র থাকবে, এতগুলো কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে তা দেখা কঠিন। আমরা সেক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থা চিহ্নিত করে ফোর্স বাড়ানো ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশি সদস্য নিয়োগ করা হতে পারে।’ তিনি জানান, সব (দল) যদি অংশগ্রহণ করে সেখানে এমনিতেই একটা ভারসাম্য থাকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেয়ে বরং তারাই শৃঙ্খলা রক্ষায় একটা ভূমিকা নেয়। কারণ তারা জানেন যে নির্বাচনে যদি কোনো পরিস্থিতির অবনতি হয়, বা ভ-ুল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের স্বাগত : আন্তর্জাতিক পযবেক্ষকদের সব সময় স্বাগত জানানোর কথা জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। এ নিয়ে কোনো চাপ থাকার সুযোগ নেই বলে জানান তিনি। ‘আমরা প্রথম থেকেই বলছি বিদেশি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক যতখুশি আসতে পারে। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো লিমিটেশন করা নেই। যেটা আছে সেটা হলে তারা আমাদের কাছে আবেদন করলে সেটা পাঠিয়ে দিই পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এরপর ভিসা দেওয়া হলে আমাদের তরফ থেকে আপত্তি থাকে না’ বলেন আলমগীর।

সর্বশেষ খবর