বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিদেশিদের সতর্ক সন্তুষ্টি চোখ নতুন আইনে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। তবে এসব প্রতিক্রিয়া ছিল সতর্কতার সঙ্গে। কারণ সবার চোখ রয়েছে নতুন আইনের দিকে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নতুন আইন যেন দমনমূলক না হয়।

স্থানীয় সময় সোমবার রাতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ওয়াশিংটনে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে যে খবর পাওয়া যাচ্ছে তাকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা আগেই বলেছি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সমালোচকদের গ্রেফতার, আটক এবং মুখ বন্ধ করতে ব্যবহৃত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই আইনটি সংস্কারের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের দীর্ঘদিনের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে সেটিকে আমরা স্বাগত জানাই। সব অংশীদারকে (স্টেকহোল্ডার) যেন নতুন খসড়া সাইবার নিরাপত্তা আইন পর্যালোচনা করার সুযোগ দেওয়া হয় এবং এই আইনটিতে যেন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নিশ্চিত করা হয়, সে বিষয়ে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে উৎসাহিত করি।

সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে দেখা করার পর জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে শুনেছি, এটা সত্য হলে আমি খুশি। আমি টেকিনক্যাল পারসন নই, সাইবার নিরাপত্তা আইনটিও আমি দেখিনি। তবে তারা (সরকার) যা করেছে ও বলছে, তা সত্যি হয়ে থাকলে প্রশংসনীয়। গোয়েন লুইস আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে। আইনটিকে ভালোভাবে যাচাই করার মতো কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি আমি নই। আইনে কী পরিবর্তন করা হয়েছে, তা আমাদের ভালো করে দেখতে হবে। তবে ঘটনা হচ্ছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এখন আর নেই, সেখানে নতুন আইন প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, বাংলাদেশ সরকারকে এটা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে যে সাইবার নিরাপত্তা আইন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে যেন ওই আইনের দমনমূলক বৈশিষ্ট্যগুলো ফিরিয়ে আনা না হয়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক দফতর বলেছে, নতুন আইনটি পাস হওয়ার আগে সব অংশীদার যেন প্রস্তাবিত এই আইন খুঁটিয়ে দেখা এবং এটা নিয়ে মতামত প্রদানের যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়। এর বিধানগুলো যেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সে আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। কেবল মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারচর্চার কারণে যাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় আনা হয়েছে, তাদেরকে অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে মুক্তি প্রদান এবং তাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। উল্লেখ্য, বিতর্কের মুখে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে এই আইনের বেশ কিছু পরিবর্তন এনে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ নামে নতুন আইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সোমবার মন্ত্রিসভায় এই বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেয়।

সর্বশেষ খবর