নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় অভিযোগ গঠন কেন বাতিল করা হবে না, এ মর্মে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাই কোর্ট। গতকাল বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি সাহেদ নুর উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এই রায়ের ফলে বিচারিক আদালতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা চলতে বাধা নেই।
আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। সরকারের কলকারখানা অধিদফতরের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী শুনানি করেন। আদেশের পর খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, হাই কোর্ট গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসের আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে মামলাটি বিচারিক আদালতে চলতে আর কোনো বাধা থাকল না। গত ৩ আগস্ট গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানির জন্য বেঞ্চ পরিবর্তন করে নতুন বেঞ্চে পাঠায় আপিল বিভাগ। ইউনূসের মামলা বাতিলে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। গত ২১ জুন শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে আবেদন করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আবেদনে অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চাওয়া হয়। গ্রামীন টেলিকম পরিদর্শনে গিয়ে অসংগতি পাওয়ায় ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে মামলায় বিবাদী করা হয়। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়। পরে ওই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে আবেদন করা হয়। একই বছরের ১২ ডিসেম্বর হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল দিয়েছিলেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে মামলা বাতিলে জারি করা রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়।