শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

নতুন মোড়কে পুরনো আইন কি না প্রশ্ন সুজনের

নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া জনসমক্ষে প্রকাশ করে নাগরিকের মতামত নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সুজন সভাপতি এম. হাফিজউদ্দিন খান ও সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। কেবল নাম পরিবর্তন করে নতুন মোড়কে পুরনো আইন প্রণয়ন করা হবে কি না তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুজন।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বহুল সমালোচিত ও বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে সরকার নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। কেবল নাম পরিবর্তন করে নতুন মোড়কে পুরনো আইন আবার চালানো হবে কি না তা নিয়ে নাগরিকরা উদ্বিগ্ন। আমরা সুজনের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সুজনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন আইনে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের প্রায় সব বিধানই থাকছে, শুধু কিছু কিছু ক্ষেত্রে শাস্তির পরিমাণ কমানো হয়েছে বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে। এমনকি বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারের বিধানও থাকছে। এর ফলে নতুন আইনটি আগের আইনের মতো নাগরিকের জন্য নিবর্তনমূলকই রয়ে যাবে বলে আমরা মনে করি। আমরা অতিসত্বর নতুন আইনের খসড়া জনসমক্ষে প্রকাশ করে নাগরিকের মতামত গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আমরা এও লক্ষ্য করছি যে, অনেকটা হঠাৎ করেই এ আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতঃপূর্বে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইনের ক্ষেত্রেও বিষয়টি আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। নাগরিক সমাজ দীর্ঘদিন থেকে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের জন্য একটি যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসছিল। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল আইন করা সম্ভব নয়। কিন্তু হঠাৎ একদিন জানা গেল আইনের খসড়া সংসদে পাসের জন্য প্রস্তুত! বস্তুত পুরনো প্রজ্ঞাপনই একটি দায়মুক্তির বিধান যুক্ত করে কমিশনে নিয়োগের এ আইন করা হয়েছে। এখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ক্ষেত্রেও সেটি হচ্ছে কি না তা-ই আমাদের আশঙ্কা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন আইনে বিভিন্ন ধারার সাজা কমানো হবে বলে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। কিন্তু সাজা প্রদান করা হয় বিচারিক প্রক্রিয়া স¤পূর্ণ শেষ হয়ে যাওয়ার পর কেউ দোষী প্রমাণিত হলে। বিচারিক প্রক্রিয়া চলমান থাকার এই দীর্ঘ সময়ে যে হয়রানির শিকার হতে হয়, তা কমবে কি না এ নিয়ে আমাদের সংশয় রয়েছে। তাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞদের স¤পৃক্ত করে নতুন আইনে নাগরিক হয়রানি যথাসাধ্য কীভাবে কমানো যায় তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এ ছাড়া এ ধরনের আইন আদৌ প্রয়োজন আছে কি না, নাকি প্রচলিত বিভিন্ন আইনের আওতায় বিষয়টি সুরাহা করা সম্ভব, তা-ও নাগরিক সমাজ, আইন বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে বসে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা দরকার বলে আমরা মনে করি।

সর্বশেষ খবর