শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

এক দফা আদায়ে ঢাকায় বিএনপির গণমিছিল

♦ এবার সেই খেলা খেলতে দেওয়া হবে না : ফখরুল ♦ তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচন নয় : আব্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

এক দফা আদায়ে ঢাকায় বিএনপির গণমিছিল

সরকারের পদত্যাগের দাবিতে গতকাল রাজধানীতে গণমিছিল করে বিএনপি - বাংলাদেশ প্রতিদিন

সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ে গতকাল ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে গণমিছিল করেছে বিএনপি। মহানগর উত্তরে মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দক্ষিণে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। গণমিছিল-পূর্ব সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের পদত্যাগ দাবিতে দুই দিনের মধ্যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এবার সেই খেলা খেলতে দেওয়া হবে না। মির্জা আব্বাস বলেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না।

এবার সেই খেলা খেলতে দেওয়া হবে না : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নতুন খেলা শুরু করেছে। সরকার আর নির্বাচন কমিশন মিলে নতুন দুটি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে, যে দল দুটি কেউ চেনে না। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার এই দল দিয়ে নির্বাচন নির্বাচন খেলা খেলতে চায়। কিন্তু এবার সেই খেলা খেলতে দেওয়া হবে না। বাড্ডায় আয়োজিত এ সমাবেশে মির্জা ফখরুল প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। নেতা-কর্মীদের মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের পদত্যাগ দাবিতে দুই দিনের মধ্যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এবার আপনাদের মরণপণ লড়াই করতে হবে। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে, দাবি আদায় ছাড়া আমরা থামব না। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভয়ভীতি, জেল-জুলুম দিয়ে দমিয়ে রাখতে পারবেন না। আন্দোলনের মাধ্যমেই এই ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করা হবে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি গণভবন এবং বঙ্গভবন পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কেরিক্যাঁচাল করে ২০১৪ ও ২০১৮-এর মতো আবারও ক্ষমতায় যেতে চাইছে আওয়ামী লীগ। এবার জনগণ তা হতে দেবে না। বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের জেল দেওয়া হচ্ছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, যত নির্যাতন, গুলি, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করুক আন্দোলন থামানো যাবে না। জনগণ এবার তাদের দাবি আদায় করবে। নির্বাচন কমিশন বাতিল এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে তিনি বলেন, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মো. আমিনুল হকের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম, শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ এতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকাল থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন গণমিছিলে।

তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচন নয় : ঢাকা মহানগর দক্ষিণের গণমিছিল-পূর্ব সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না। কমলাপুরে আয়োজিত এ সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিনের পরিচালনায় গণমিছিলে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলু, ডা. জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবদীন, আহমেদ আযম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, মনিরুল হক চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন নবী খান সোহেল প্রমুখ।

মির্জা আব্বাস বলেন, অবৈধ সরকার শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করার অধিকারও কেড়ে নিয়েছে। পেটুয়া পুলিশ বাহিনী দিয়ে নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে। তারা সরাসরি গুলি করছে। এই স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটাতে হবে। তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশন আমরা মানি না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বর্তমান সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সারা দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। আমাদের দফা এক, দাবি এক শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। গণমিছিল উপলক্ষে বেলা ১টা থেকে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে বিএনপি ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কমলাপুরে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতা-কর্মী বাড়তে থাকে।

সর্বশেষ খবর