শিরোনাম
রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্ল্যান রিভিউতে আটকা বে-টার্মিনাল

পিছিয়ে যাচ্ছে আনুষ্ঠানিক নির্মাণকাজ

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বে-টার্মিনালের নির্মাণ প্রক্রিয়া আটকে গেছে প্রকল্পের মাস্টার প্ল্যান রিভিউতে। প্রকল্পের দুই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠালেও তা অনুমোদন না দিয়ে প্ল্যান রিভিউ করতে বলা হয়েছে। যা বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্ল্যান রিভিউতে যাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের মেগা প্রকল্প বে-টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শুরুর বিলম্ব হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বন্দরের এ মেগা প্রকল্পকে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে আগামীর আধুনিক বন্দর হিসেবে। যাতে থাকবে স্পেশাল জেটি, ব্রেক ওয়াটারসহ উন্নত বন্দরের সব সুযোগ-সুবিধা। এ টার্মিনাল চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দরে কমবে জাহাজজট। হ্রাস পাবে আমদানি-রপ্তানি ব্যয়। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, মন্ত্রণালয় বে-টার্মিনালের মাস্টার প্ল্যান রিভিউ করার নির্দেশ দিয়েছে। বর্তমানে প্ল্যান রিভিউর প্রক্রিয়া চলছে। প্রকল্পের রিভিউ প্ল্যান মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত অনুমোদন দিলেই বে-টার্মিনাল নির্মাণের পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হবে।

জানা যায়, বে-টার্মিনাল প্রকল্পের মাস্টার প্ল্যান, ডিটেইল ড্রয়িং, ডিজাইন গত বছরের শেষদিকে বন্দর কর্তৃপক্ষকে জমা দেয় দুই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কুনওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনসালটিং কোম্পানি লিমিটেড এবং ডাইয়াং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। তা বন্দরের বোর্ড মিটিংয়ে অনুমোদন করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় তা অনুমোদন না দিয়ে প্ল্যান রিভিউ করতে বলে। জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্ল্যান রিভিউ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর আগে ২০১৬ সালে বে-টামিনাল প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি করে জার্মানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘শেল হর্ন’। ওই ফিজিবিলিটি স্টাডিতে তিনটি টার্মিনাল করার প্রস্তাব করা হয়। প্রথম পর্যায়ে বন্দর টার্মিনাল নির্মাণ করবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে পিপিপি মাধ্যমে বাকি দুটি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ব্রেক ওয়াটার ও চ্যানেল ড্রেজিং করা হয়। এরই মধ্যে ব্রেক ওয়াটারের জন্য ৪ হাজার কোটি টাকা অর্থায়নের সম্মতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। পিপিপির ভিত্তিতে দুটি টার্মিনাল নির্মাণ এবং পরিচালনার জন্য বিদেশি দুটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

দেশের অর্থনীতির পাইপ লাইন খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে বঙ্গোপসাগর উপকূলীয় আউটার রিং রোডের লাগোয়া সাগর উপকূলে বে-টার্মিনাল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় আড়াই হাজার একর ভূমিতে গড়ে উঠবে দেশের আগামীর বন্দর। এ মেগা প্রকল্পটি পুরোদমে চালু হলে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামের ওপর থেকে অনেকাংশে কমবে চাপ। ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ বে-টার্মিনালে ২৪ ঘণ্টাই জাহাজ নোঙর করতে পারবে। এ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকবে রেল, সড়ক, নৌপথ। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর ব্যবহারের সুবিধা থাকবে। জাহাজ বার্থিংয়ের ক্ষেত্রে নাইট নেভিগেশনসহ ২৪ ঘণ্টা জাহাজ চলাচল করতে পারবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে কন্টেইনারের ভাড়া প্রতি ইউনিটে ২ হাজার ডলার থেকে ১ হাজার মার্কিন ডলারে নেমে আসবে। ফলে জাহাজ ভাড়া কমে যাবে। আমদানি ব্যয় হ্রাস পেলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় ঘটবে। কমবে বন্দরে জাহাজ জট। বে-টার্মিনালে একসঙ্গে রাখা যাবে ৫০ হাজারের বেশি কন্টেইনার। যাতে থাকবে স্পেশাল জেটি, ব্রেক ওয়াটার, এলপিজি, এলএনজি টার্মিনালসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা।

সর্বশেষ খবর