রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

অভিযোগের তীর সিন্ডিকেটের দিকে

ডিমের বাজারে অরাজকতা, অভিযান জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক

অভিযোগের তীর সিন্ডিকেটের দিকে

ডিমের অস্বাভাবিক দাম নিয়ন্ত্রণে বাজারে অভিযান শুরু করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। গতকাল রাজধানী ঢাকা, ফরিদপুর, চাঁদপুরসহ দেশের কয়েকটি এলাকার বাজার ও ডিমের আড়তে অভিযান চালিয়ে অনিয়মের অভিযোগে জরিমানা করা হয়েছে ডিম ব্যবসায়ীদের। তবে এখনো কমেনি গরিবের আমিষখ্যাত ডিমের দাম। গতকালও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ১৬৫-১৭০ টাকায় ডিম বিক্রি হতে দেখা গেছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, বেশি দামে তাদের ডিম কেনা। কম দামে বিক্রির সুযোগ নেই।

গত ৭ আগস্ট থেকে লাফিয়ে বাড়তে থাকে ডিমের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে এলাকাভেদে ডজনে বাড়ে ১৫-২০ টাকা। এ নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অসংখ্য মানুষ। হঠাৎ করে দেশের সব মুরগি ডিম পাড়া বন্ধ করে দিল কি না- বিক্রেতাকে এমন প্রশ্ন করতেও শোনা গেছে অনেক ক্রেতাকে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার অভিযোগের তীর ছুড়েছেন করপোরেট সিন্ডিকেটের দিকে। তিনি বলেছেন, এসএমএসের মাধ্যমে করপোরেট ব্যবসায়ীরা ডিমের দাম বাড়াচ্ছে। তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের সব ক্ষুদ্র পোলট্রি ব্যবসায়ীরা। ডিম ও মুরগি উৎপাদন করে করপোরেট ব্যবসায়ীদেরকে দেওয়ার চুক্তি করলেই খামারিরা কম টাকায় পোলট্রি ফিড ও বাচ্চা পাচ্ছে। করপোরেট ব্যবসায়ীরা সেই ডিম ও মুরগি অতিরিক্ত মুনাফায় বিক্রি করছে। অন্যদিকে যেসব খামারি তাদের সঙ্গে চুক্তি করছে না তাদেরকে মুরগির খাবার কিনতে হচ্ছে অনেক বেশি দামে। উৎপাদন খরচ বাড়ায় অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। ডিম ও মুরগির দাম কমাতে করপোরেট সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। পোলট্রি ফিডের দাম কমাতে হবে। বাজারের পাশাপাশি করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোয় অভিযান চালাতে হবে। কারণ তারা পোলট্রি খাবার বিক্রিতে অস্বাভাবিক লাভ করছে। পোলট্রি শিল্প ধ্বংস করে দিচ্ছে। অথচ সেটা না করে তাদেরকেই নানা সুবিধা দেওয়া হচ্ছে! তাদের নিয়েই বিভিন্ন মিটিং করা হচ্ছে, সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে!

এদিকে ডিম নিয়ে ক্ষোভ ও সমালোচনার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ডিমের আড়তে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। জরিমানা করা হয় একটি প্রতিষ্ঠানকে। গতকাল রাজধানীর কাপ্তানবাজার ও মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে অভিযান চালিয়ে ডিম ক্রয়ের ক্যাশ মেমোতে দাম উল্লেখ না থাকায়, ডিম বিক্রির ক্যাশ মেমো না দেওয়ায় এবং ডিমের মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করার পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করেছে সংস্থাটি। একই দিনে ফরিদপুরের বিভিন্ন বাজার ও আড়তে অভিযান চালিয়ে ডিমের দামে কারসাজি করা, ডিমের বিক্রয় রশিদে মূল্য না থাকা, মূল্য তালিকা যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন না করায় সদর উপজেলার বাইপাস সড়কে অবস্থিত অ্যাডভান্স পোলট্রি অ্যান্ড ফিস ফিড লিমিটেডকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া চাঁদপুরের বিভিন্ন বাজার ও আড়তে অভিযান চালিয়ে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। চাঁদপুর শহরের পালবাজার এলাকায় জেনিথ সুইটস অ্যান্ড বেকারি নামে প্রতিষ্ঠানে দধির মধ্যে চুল ও পোকা পাওয়ায় এবং দুই ডিম বিক্রেতার দোকানে মূল্য তালিকা না থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে মোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভোক্তার অধিকার রক্ষায় অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।

সর্বশেষ খবর