বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

একক নির্বাচনের প্রস্তুতিতে জাপা অর্ধশত নতুন মুখ

নিজস্ব প্রতিবেদক

একক নির্বাচনের প্রস্তুতিতে জাপা অর্ধশত নতুন মুখ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একক না জোটগতভাবে অংশ নেবে তা নিয়ে এখনো দ্বিধায় রয়েছে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলটির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, আপাতত এককভাবে নির্বাচনে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে সেপ্টেম্বরে। তাদের মতে, জোটগতভাবে ভোট করলেও জোটের বাইরে শতাধিক আসনে দলীয় প্রার্থী থাকবে। এক্ষেত্রে অর্ধশত আসনে আসতে পারে নতুন মুখ। এ বিষয়ে জাপার মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জাতীয় পার্টি এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। সময় এলে অবস্থা বুঝে জনগণের চাহিদা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি কোনো জোটে যাবে কি না বা নির্বাচন কীভাবে করবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গেই থাকতে চান সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির বেশির ভাগ সংসদ সদস্য। তারা বলছেন, ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে জোট করলে সমঝোতার ভিত্তিতে বেশি আসন পাওয়া সম্ভব। বর্তমানে পার্টির নির্বাচিত সংসদ সদস্য ২৩ জন। চারজন সংরক্ষিত আসনের সদস্য। সব মিলিয়ে ২৭ জন সংসদ সদস্য নিয়ে সংসদে বিরোধী দলের প্রতিনিধিত্ব করছে জাতীয় পার্টি। একক নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবি হতে পারে। তবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বসহ একটি অংশ সরকারের সঙ্গে এবার গাঁটছড়া বাঁধতে আগ্রহী নয়। তারা রাজনীতিতে একটা ‘স্বতন্ত্র’ অবস্থান নেওয়ার পক্ষে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে অবস্থান স্পষ্ট করতে না পারায় এ অংশটি দ্বিধাগ্রস্ত। একটি অংশের সরকারের সঙ্গে থাকার, অন্য অংশটির স্বতন্ত্র অবস্থান নেওয়ার তৎপরতা দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধোঁয়াশা তৈরি করেছে। তারা এখনো বুঝতে পারছেন না আগামী নির্বাচনে জাপার ভূমিকা কী হবে। কারণ, প্রকাশ্যে না হলেও ভিতরে ভিতরে দলের অভ্যন্তরে দুটি ধারা স্পষ্ট। একটি ধারা দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের নেতৃত্বে, অন্যটি দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদকে ঘিরে। যে অংশটি সরকারের সঙ্গে থাকতে চায়, তারা গোপনে রওশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেবে জাপা। জোটের বিষয়ে কৌঁসুলি অবস্থান নিয়েছে তারা। এর ফলে আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের সঙ্গে দরকষাকষি করার সুযোগ পাচ্ছে দলটি। সূত্র জানায়, দলীয় সংসদ সদস্যদের প্রায় সবাই সরকারের পক্ষে থাকার কথা বলছেন। অন্যদিকে বেশির ভাগ প্রেসিডিয়াম সদস্য সরকারের সঙ্গে থাকার বিরোধিতা করেছেন। জানা যায়, ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের তালিকা ধরে প্রার্থী বাছাই করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক আসনে প্রার্থীদের খসড়া তালিকা করা হয়েছে। সে অনুযায়ী, নির্বাচনে ৫০টির বেশি আসনে আসছে নতুন মুখ। বাকি আসনেও প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শেষ হবে নভেম্বরে। জানা যায়, দ্বন্দ্বের কারণে হেভিওয়েট অনেক প্রার্থী বাদ পড়তে যাচ্ছেন। প্রার্থী চূড়ান্ত করার কাজে নিয়োজিত জাপার একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত একক নির্বাচনের সিদ্ধান্তে অনড় দলটি। এই চিন্তা থেকেই পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের নির্দেশে প্রার্থীদের সম্ভাব্য তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে। অনেক আসনে রয়েছেন একাধিক প্রার্থী। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, একক নির্বাচনের চিন্তা থেকে ৩০০ আসনে প্রার্থী তালিকা হচ্ছে। খসড়া তালিকা তৈরির পর নির্বাচনের আগে তা চূড়ান্ত হবে। শেষ সময় পর্যন্ত প্রার্থী তালিকা পরিবর্তন হতে পারে বলেও জানান তিনি। তবে সবকিছু জাপার রাজনৈতিক অবস্থান ও পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে।

সর্বশেষ খবর