সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

আরও কিছুদিন হাসপাতালে থাকতে হবে খালেদা জিয়াকে

১১ মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানি ১৩ সেপ্টেম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আরও কিছুদিন হাসপাতালে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, এখনো তাঁকে হাসপাতালে আরও কিছুদিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন বলে চিকিৎসকরা মনে করছেন। সে কারণে তাঁকে আরও কিছুদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। ইতোমধ্যেই তাঁর নানা শারীরিক জটিলতার কিছুটা উন্নতি হয়েছে, তবে সেটাকে ভালো বলা যাবে না। গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। সেগুলোর প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড তাঁর চিকিৎসা দিচ্ছে। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, উচ্চরক্তচাপ ও লিভার সিরোসিসসহ নানা রোগে ভুগছেন। বর্তমানে তিনি লিভার জটিলতায় ভুগছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি কয়েক দফা চিকিৎসা নিয়েছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার তাঁকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করানোর দাবি করা হলেও সরকারের অনুমতি মিলছে না। ফলে তাঁকে চিকিৎসকদের পরামর্শমতো বিদেশে অ্যাডভান্স মাল্টি ডিসিপ্লিনারি হেলথ সেন্টারে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে ড্যাবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. আজিজুল হক ভূঁইয়া গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে দেশে চিকিৎসা দেওয়ার মতো আর কিছু বাকি নেই। চিকিৎসার জন্য যে ধরনের যন্ত্রপাতি দরকার, সে সব বাংলাদেশে নেই। ফলে তাঁকে বাঁচাতে হলে বিদেশে অ্যাডভান্স সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা অতিজরুরি। তাই মানবিক দিক বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে দ্রুত বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’

খালেদার ১১ মামলার অভিযোগ গঠন শুনানি পিছিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামে দায়ের করা হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহসহ ১১ মামলার শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদের শুনানির এ দিন ধার্য করেন। এ দিন মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাগুলো শুনানির জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়ার পক্ষে অধিকাংশ মামলার কার্যক্রম হাই কোর্টে স্থগিত আছে জানিয়ে সময়ের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।

 ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল এ তথ্য জানান। মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাজধানীর দারুস সালাম থানায় করা নাশকতার ৮টি, যাত্রাবাড়ী থানার ২টি ও রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলা। যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলা চার্জশিট গ্রহণের বিষয়ে শুনানির জন্য রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাটি দায়ের করা হয়।

এদিকে যাত্রাবাড়ী থানার মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা হামলা হয়। এতে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১ ফেব্রুয়ারি মারা যান নূর আলম (৬০) নামে এক যাত্রী। ওই ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কে এম নুরুজ্জামান। ওই বছরের ৬ মে খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে ডিবি পুলিশ। অন্যদিকে ২০১৫ সালে দারুস সালাম থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে ৮টি মামলা দায়ের করা হয়। এ আট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়। ২০১৭ সালের বিভিন্ন সময়ে মামলাগুলোর চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। সব মামলায় খালেদা জিয়াকে পলাতক দেখিয়ে তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়।

পরে খালেদা জিয়া মামলাগুলোয় আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।

সর্বশেষ খবর