সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিএনপি ভোটে আসবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি ভোটে আসবে

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনের ‘চতুর্মুখী প্রস্তুতি’ শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। তিনি বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে ভোট করায় কোনো ধরনের ‘চাপ ছিল না’, এখনো তারা ‘চাপমুক্ত’। এ ছাড়া বিএনপিও ভোটে আসবে আশা প্রকাশ করেছেন এই কমিশনার। গতকাল নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন রাশেদা সুলতানা। সাংবিধানিকভাবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। সেক্ষেত্রে ১ নভেম্বর শুরু হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা। সেই হিসেবে এ বছরের শেষ সপ্তাহে বা আগামী বছরের প্রথম সপ্তাহে ভোট করার কথা রয়েছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশনের।

এক প্রশ্নের উত্তরে রাশেদা সুলতানা বলেন, আমরা এতগুলো ভোট করেছি, আমরা কোনো চাপ অনুভব করিনি। এখনো আমাদের মাথায় কোনো চাপ নেই। কিন্তু বাইরে থেকে মানুষ ধারণা করতে পারে এরকম-ওরকম চাপ রয়েছে। সত্যিকার অর্থে কোনো তরফ থেকে বলা হয়নি এরকম করে দেন, ওরকম করে দেন। কোনো দিক থেকেই কমিশনের কেউ চাপের মধ্যে নেই। এটা জনগণকে বিশ্বাস করতে হবে। সামনের দিনগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতাও প্রশমিত হবে বলে প্রত্যাশায় রয়েছে কমিশন। রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে কমিশনের করণীয় কিছু নেই। সব সময় বলি-বিশ্বাস করি, এসব প্রশমিত হয়ে আসবে। আলটিমেটলি একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য ভোট করায় আমাদের চেষ্টা থাকবে নিরন্তর।’ তিনি বলেন,  ‘কোনোদিন রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল না? অতীতকে আমরা আঁকড়ে ধরব না। অতীতের অভিজ্ঞতা নিয়ে এগোতে হবে।’ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভোটের দিন ভোরে ব্যালট পেপার পাঠানোর চিন্তাভাবনা নিয়েও কথা বলেন এ নির্বাচন কমিশনার।

তিনি বলেন, ‘ভোট মানেই চ্যালেঞ্জ। ইভিএমে হোক, ব্যালটেই হোক। চ্যালেঞ্জ উত্তরণে যা যা করা দরকার তা চেষ্টা করে যাচ্ছি। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার একটা বড় স্টেপ-দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চল ছাড়া সবখানে ব্যালট পেপার যতটা সম্ভব সকালে পাঠানোর চেষ্টা করব। এসব নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা চলছে।’

বিএনপির আশায় ইসি : কমিশনকে ‘আস্থায় এনে’ বিএনপি নির্বাচনে আসবে বলেও প্রত্যাশা করছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘এখনো আশাবাদী (আমরা), বিএনপি ভোটে আসবে। দেড় বছর ধরে বরাবরই বলে আসছি, তারা আসবে। রাজনীতির কূটকৌশল, কে কীভাবে এগোবে ভোটের আগের দিন পর্যন্ত বলা কঠিন। এটা তারা কীভাবে নিচ্ছেন, কী কারণে করছেন, কী চিন্তা করছেন এটা তাদের ব্যাপার। আমরা কিন্তু আশাবাদী, কমিশন মনে করে ইনশা আল্লাহ আসবে।’ বিএনপির উদ্দেশে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আস্থায় রাখতে না পারলে... উনারা মাথায় নিচ্ছে না আস্থায় আনা যায়। মাথায় নিলেই আস্থায় এসে যাবে। আমার ধারণা, একটা পর্যায়ে উনারা আস্থায় নেবেন, ভোটে আসবে আমার বিশ্বাস।’

সব প্রস্তুতিই চলছে : সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধন, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়োগ নীতিমালা ও প্যানেল প্রস্তুতের নির্দেশিকা এবং প্রশিক্ষণ বর্ষপঞ্জি চূড়ান্ত করতে আজ (সোমবার) সভায় বসতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের নির্দেশিকা তৈরির কাজ চলছে জানিয়ে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘ভোট করতে গেলে আমাদের যে ধরনের কাজ করতে হয়, সব শুরু করে দিয়েছি। অনেক এগিয়ে গেছে ও চলছে। তোড়জোড় চলছে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের নির্দেশিকা তৈরি করার, সোমবারের কমিশন সভায় তা উঠবে।’ রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘প্রশিক্ষণ শুরুর আগে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ করা লাগবে। এ জন্য ভোট কেন্দ্রের তালিকা করার খসড়া এসে গেছে। এখন ভোট কেন্দ্র ও ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার বিষয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কেন্দ্রভিত্তিক প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং, পোলিং অফিসার দিয়ে কয়েক লাখ লোকবলকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে।’ রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর তফসিল ঘোষণার পর প্রতীক বরাদ্দ শেষে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে।’ বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা জানান, কমিশন সভায় এসব বিষয়ে আলোচনা হলে বিস্তারিত জানানো যাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়োগ দেব না। স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে আসবে। নীতিমালা মেনে তাদের কাজ করতে হবে।’

সর্বশেষ খবর