বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

অপেক্ষায় কয়েক শ কর্মকর্তা

♦ সেপ্টেম্বরের শুরুতেই প্রশাসনে বড় পদোন্নতি ♦ যুগ্মসচিব হচ্ছেন কয়েক শ কর্মকর্তা ♦ ২২ ব্যাচের সঙ্গে থাকবেন বঞ্চিত সিনিয়ররাও ♦ পদোন্নতিপ্রাপ্ত অধিকাংশকে ইনসিটু রাখা হবে

ওয়াজেদ হীরা

যুগ্মসচিব হওয়ার আশায় দিন গুনছেন প্রশাসনের কয়েক শ কর্মকর্তা। ছয় বছরের বেশি সময় ধরে উপসচিব হিসেবে কাজ করা এসব কর্মকর্তার দীর্ঘ অপেক্ষা দ্রুতই শেষ হচ্ছে। যাচাইবাছাই ও বিভিন্ন স্তরের বৈঠক শেষ হয়েছে। এখন যে কোনো সময় পদোন্নতি দিয়ে তালিকা প্রকাশ করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

জাতীয় নির্বাচনের আগেই প্রশাসনে পদোন্নতি দিতে যাচ্ছে সরকার। গত জুলাইয়ে পদোন্নতির কথা থাকলেও দীর্ঘদিনেও সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) সভায় বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। সব ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বরে যুগ্মসচিব হিসেবে পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। যাঁরা পদোন্নতি পাচ্ছেন তাঁদের চাকরিজীবনের শৃঙ্খলা, দুর্নীতির সম্পৃক্ততাসহ ছাত্র ও চাকরি জীবনের তথ্য-উপাত্ত এবং স্বজনদের রাজনৈতিক পরিচয় খতিয়ে দেখা হয়েছে বলেও জানা যায়।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে অনেকদিন ধরেই। ইতোমধ্যে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব পর্যায়ে পদোন্নতি হয়ে যাবে। যাঁরা পদোন্নতি পাচ্ছেন তাঁরা অনেক আগেই যোগ্যতা অর্জন করেছেন।

প্রশাসনে বর্তমানে যুগ্মসচিবের নিয়মিত পদ ৩৩২টি। কর্মরত আছেন দ্বিগুণের বেশি ৭২৫ জন কর্মকর্তা। নতুন করে পদোন্নতি পেলে যুগ্মসচিবের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে। সর্বশেষ গত বছরের ২ নভেম্বর ১৭৫ উপসচিবকে পদোন্নতি দিয়ে যুগ্মসচিব করা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ পদোন্নতি শাখার অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুস সবুর মণ্ডল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এসএসবির বেশ কয়েকটি সভা হয়েছে। যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন যে কোনো সময় এটি প্রকাশ করা হবে। তিনি আরও বলেন, বিসিএস ২২ ব্যাচ ফ্রেশ ব্যাচ হিসেবে আছে। এর সঙ্গে বিভিন্ন সময় পদোন্নতিবঞ্চিত (লেফট আউট) সিনিয়ররাও থাকবেন। কতজনকে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

জানা গেছে, ৫৫০ কর্মকর্তাকে পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। শূন্যপদ না থাকায় পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অধিকাংশকে ইনসিটু (উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করা স্থানে) রাখা হবে। উপসচিব পর্যায়ে অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৮৩০। কর্মরত আছেন ১ হাজার ৩১৫ জন। এ পদেও পদোন্নতির প্রক্রিয়া চলছে।

ক্যাবিনেট ডিভিশনের যুগ্মসচিব হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা একাধিক কর্মকর্তা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘একটা পদোন্নতির আশায় আমরা অপেক্ষা করছি। সত্যি বলতে, এটা যারা পাব তারা খুবই সৌভাগ্যবান। কিন্তু সেই সময় যেন আসেই না।’ ২২ ব্যাচের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন পরিবারের সদস্যরা প্রায়ই জানতে চায়, প্রমোশনের কী হলো, কিছু বলতে পারি না। আবার ধরেন সবার হলো আমার হলো না সেটাও কাউকে বোঝানো যায় না।’

জানা যায়, এবার উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব করার জন্য নিয়মিত হিসেবে বিসিএস ২২তম ব্যাচকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাচে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা ৩০১ জন। কেউ কেউ চাকরিতে নেই। এ ব্যাচে ২৪৩ জন প্রশাসন ক্যাডারের এবং ইকোনমিক ক্যাডার থেকে একীভূত হয়ে প্রশাসন ক্যাডারে এসেছেন ৩৯ জনসহ মোট ২৮২ জন। নিয়মিত ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাচের বঞ্চিত আরও ৭৬ কর্মকর্তার নাম যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় আছে। তাদের মধ্যে ১৮তম ব্যাচের ছয়, ২০তম ব্যাচের ৪১ এবং ২১তম ব্যাচের ২৯ জনের নাম এসেছে বলে জানা যায়। প্রশাসন ছাড়া অন্যান্য ক্যাডারের ২০৭ কর্মকর্তার নামও পদোন্নতির প্রস্তাব করা হয়েছে। সব মিলিয়ে পদোন্নতির আশায় রয়েছেন ৫৬৫ জন।

 

সর্বশেষ খবর