শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

চন্দ্রযান দেবে নতুন তথ্য

প্রতিদিন ডেস্ক

চন্দ্রযান দেবে নতুন তথ্য

ভারতের চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের পর দেশজুড়ে যখন বিজয় উৎসব চলছে, তখন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইসরো’র প্রধান এস সোমনাথ কুমেরুতে চন্দ্রযান নামার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। সূত্র : এএনআই

সোমনাথ গতকাল দুপুরে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্যাখ্যা করেন- কেন চন্দ্রযান-৩ চাঁদে অবতরণের জন্য তার দক্ষিণ মেরুকেই বেছে নিল। সোমনাথ বলেন, ‘আমরা চাঁদের দক্ষিণ মেরুর থেকে ৭০ ডিগ্রি দূরে অবতরণ করেছি। মানছি, দক্ষিণ মেরুতে আলো-আঁধারি পরিবেশ। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখানে নামার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হলো- চাঁদের এই এলাকায় মহাকাশ গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’ তিনি উল্লেখ করেন, পানির খোঁজ তো বটেই, তার সঙ্গে চাঁদের এই এলাকায় ভূকম্পনের মাত্রা, মাটিতে থাকা রাসায়নিক, এমনকি খনিজ পদার্থের সন্ধানও চালাবে ইসরো। সোমনাথ বলেন, ‘যেসব বিজ্ঞানী চাঁদ নিয়ে গবেষণা করছেন, তারা চাঁদের এই এলাকা নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন। কারণ শেষ পর্যন্ত মানুষ চাঁদে যেতে চায়। সেখানে থাকার মহল্লাও বানাতে চায়। যাতে সেখান থেকে তারা দূরের মহাকাশে পাড়ি জমাতে পারেন। তাই আমরা বলতে পারি, সেই কাজের জন্য সেরা এলাকাটি খুঁজে বের করার চেষ্টায় রয়েছি আমরা। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে তেমন জায়গা খুঁজে পাওয়ার অপার সম্ভাবনা রয়েছে।’

উল্লেখ্য, গত বুধবার সন্ধ্যায় ইসরোর চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে। ভারতীয় সময় গতকাল ভোর থেকে চাঁদের মাটিতে হাঁটাচলা শুরু করেছে অভিযাত্রী যান প্রজ্ঞান। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্যের পর ভারতজুড়ে গতকাল ছিল উৎসবের মেজাজ। আতশবাজি পুড়িয়ে ভারতের সাফল্য উদযাপনে মেতেছে সাধারণ মানুষ। আবেগে ভেসেছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় জনগণ ঢোল বাজিয়ে এবং আতশবাজি পুড়িয়ে এটি উদযাপন করেছে এবং মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাও এতে শামিল হয়েছিলেন। এ ছাড়া রাজনৈতিক মহল থেকেও নেতাদের প্রতিক্রিয়া এসেছে। চন্দ্রযান-৩ এর সফট ল্যান্ডিংয়ের সাফল্যের কৃতিত্ব প্রসঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বক্তব্য প্রকাশ্যে এসেছে। নেতারা এ ব্যাপারে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তাদের দলের শাসনামলের সময়ে সম্ভব হওয়া অর্জনের সঙ্গে যুক্ত করে উপস্থাপন করছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এই সাফল্য সমগ্র মানবতার। ভবিষ্যতের অভিযানে অন্য দেশগুলোও এর ফলে উপকৃত হবে। তিনি বলেন, চাঁদের পর এবার সূর্যের অভিযানে শিগগিরই আদিত্য এল-১ উৎক্ষেপণ করবে ইসরো। শুক্রগ্রহে পাড়ি দিতে হবে আরও একটি অভিযান। আর আছে গগনযান। এর মাধ্যমে মহাকাশে অভিযাত্রী পাঠাবে ভারত। ‘ইসরো’ প্রধান এস সোমনাথও বলেছেন, আদিত্য এল-১ শিগগিরই সূর্যাভিযানে পাড়ি দেবে। এ ছাড়া সেপ্টেম্বরের শেষে বা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে গগনযান সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হবে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে মহাকাশ গবেষণার প্রয়োজনীয়তা দেখে পণ্ডিত নেহরু (ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেসের তৎকালীন নেতা) ইসরোর ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। তাঁর দূরদর্শিতার ফলেই আজ ভারত সারা বিশ্বে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড গড়েছে।

শেখ হাসিনার অভিনন্দন : চাঁদে চন্দ্রযান-৩-এর সফল অবতরণ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং দেশটির জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চাঁদের পৃষ্ঠে মহাকাশযান অবতরণকারী ভারতকে বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য শেখ হাসিনা ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) এবং এর বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানান। বুধবার নরেন্দ্র মোদির কাছে তাঁর বার্তায় প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, বাংলাদেশ এই গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষে এবং এই ঐতিহাসিক অর্জনে ভারতের সঙ্গে আনন্দিত, যা বিজ্ঞান ও মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রগতিতে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের এবং অনুপ্রেরণার বিষয়।

সর্বশেষ খবর