শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্রেফ দুর্ঘটনা নাকি হত্যা, বিশ্ব তোলপাড়

প্রিগোজিনের মৃত্যু নিয়ে পুতিন নীরব, অবাক নন বাইডেন

প্রতিদিন ডেস্ক

স্রেফ দুর্ঘটনা নাকি হত্যা, বিশ্ব তোলপাড়

ইয়েভজেনি প্রিগোজিন

রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে নানামুখী আলোচনা শুরু হয়েছে। এ মৃত্যুর ঘটনায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পুরো নীরব রয়েছেন। তিনি দুই দিনেও কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার প্রতিক্রিয়ায় মূলত একটা শব্দই তুলে ধরেছেন, সেটা হলো- এ ঘটনায় তিনি ‘অবাক নন’। সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি, রয়টার্স। খবরে গতকাল নিশ্চিত করা হয়েছে, বুধবার রাতের বিমান দুর্ঘটনায় প্রিগোজিনসহ বিমানের ১০ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন। প্রিগোজিনের মৃত্যুর খবরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘প্রিগোজিনের মৃত্যু সংবাদে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমি জানি না কী ঘটেছিল। তবে আমি অবাক হইনি। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ইশারা ছাড়া রাশিয়ায় কিছুই হয় না। কিন্তু এ ঘটনার বিষয়ে আমি বেশি কিছু জানি না।’ মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসনও বলেন, ‘যদি প্রিগোজিনের মৃত্যু সংবাদ প্রমাণিত হয়, কেউ অবাক হবেন না।’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘প্রিগোজিনের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ইউক্রেনের কোনো কিছু করার নেই। ঘটনার সঙ্গে ইউক্রেনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটা নিশ্চিত। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে কার হাত আছে সেটা সবাই উপলব্ধি করতে পেরেছে বলে আমার ধারণা।’ তিনি গতকাল পর্র্তুগালের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলোর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন। পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট এখন কিয়েভ সফর করছেন। ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের সহকারী মিখাইলো পোডোলিয়াক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘ক্রেমলিনের সঙ্গে কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, বিমান বিধ্বস্ত হওয়া তারই সংকেত। বিশ্বাসঘাতকতা মৃত্যু সমান।’ এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী কাজা ক্যালাস সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বিরোধীদের শেষ করবেন পুতিন। যারা ভিন্নমত প্রকাশের কথা চিন্তা করছে তাদের ভয় দেখাবেন।’ পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেবিগনিউ রাউ রাষ্ট্রীয় নিউজ চ্যানেল টিভিপি ইনফোতে বলেছেন, ‘যারা পুতিনের ক্ষমতায় থাকার জন্য হুমকি, তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয় না।’ এদিকে প্রিগোজিনের মৃত্যুর খবরে সারা বিশ্বে হইচই পড়ে গেলেও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। তিনি পুরো নীরব রয়েছেন। উল্লেখ্য, দুই মাস আগে প্রিগোজিন ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেছিলেন। ফলে তার মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা কীভাবে হলো, কারণই-বা কী- এসব প্রশ্ন সামনে চলে আসছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পুতিনের সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গকারী প্রিগোজিনের এমন মৃত্যু ‘অনিবার্য ছিল’। কারণ, পুতিন কখনো বেইমানদের ক্ষমা করেন না। এদিকে ওয়াগনার বাহিনীর টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোন দাবি করেছে, আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। তবে দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি তারা। গ্রে জোন চ্যানেলে দেওয়া আরেক পোস্টে বলা হয়, ‘রাশিয়ার প্রতি বিশ্বাসঘাতকদের কর্মকাণ্ডের কারণে ওয়াগনারের প্রধান, রাশিয়ার বীর, সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ইয়েভজেনি প্রিগোজিন নিহত হয়েছেন।’ আরেক খবর অনুযায়ী, গতকাল সেন্ট পিটার্সবার্গের লোকেরা ভাড়াটে গোষ্ঠীর সদর দফতরের বাইরে একটি অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে ওয়াগনার খুলির লোগো সংবলিত ফুল বিছিয়ে দেয়। এদিকে এ দুর্ঘটনার বিষয়ে তদন্তের জন্য রুশ কর্তৃপক্ষ একটি বিশেষ কমিশন গঠন করেছে। এ তদন্ত কমিটি গতকাল জানায়, এরই মধ্যে তারা দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

সর্বশেষ খবর