শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ

বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে শোক মিছিল করছে : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে শোক মিছিল করছে : কাদের

বৈরী আবহাওয়ায়ও জনস্রোত নামিয়ে রাজধানীতে শান্তি সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি কালো পতাকা নিয়ে শোকের মিছিল নামিয়ে আন্দোলনের বারোটা বাজিয়েছে। তাদের নেতাদের গলার জোর কমে গেছে, মিছিলের শক্তি নেই। তাদের আন্দোলনের মরা গাঙে ঢেউ আসে না। বিএনপির আন্দোলন গরুর হাটে ধ্বংস হয়েছে। সমাবেশের নামে পিকনিক পার্টি করে তারা। ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে শোক মিছিল করছে তারা। বিএনপি বলে গণমিছিল। যে মিছিলে জনগণ নেই, সেই মিছিল গণমিছিল হয় কী করে? বিএনপিকে এবার আওয়ামী লীগ দেখাবে গণমিছিল কাকে বলে। আওয়ামী লীগের মিছিল মানে জনতার ঢল। ১ সেপ্টেম্বর লাখ লাখ তরুণের সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। শোকের কালো পতাকা নয়, বিজয়ের পতাকা হাতে লাখো তরুণের মিছিল দেখাবে আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী এতে সভাপতিত্ব করেন। দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, সদস্য সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির বাজার ভাঙা হাঁটের মতো। ভাঙা হাঁট আর জমে না। ডিসেম্বরে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় বসবে, দেশ চালাবেন, তারেক জিয়া দেশে আসবে, কোথায় গেল এসব লাফালাফি? গোলাপবাগের গরুর হাটে গিয়ে তাদের লাফালাফি শেষ। পদযাত্রা শুরু করেও বিএনপি আন্দোলন জমাতে পারেনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি দিনের বেলায় জাগরণের স্বপ্ন দেখছে। তারা দিবাস্বপ্ন দেখছে। এদেশের শতকরা ৭০ শতাংশ মানুষ যাদের ভালোবাসে, যাদের ভোট দিতে চায়, তারা (আওয়ামী লীগ) কেন ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবে? শেখ হাসিনা কেন বিদায় নেবেন?

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নিষেধাজ্ঞার আতঙ্ক ছড়ায়। তারা রাস্তা অবরোধ করে। ঢাকার প্রবেশপথ আটকে রাখে। তাহলে বিএনপিরও তো নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা দরকার। বিএনপির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় না কেন? সে প্রশ্ন আমরা করতে চাই। বঙ্গবন্ধুর খুনিরা বড় বড় দেশে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। তারা জাতির পিতার হত্যাকারীদের কেন ফিরিয়ে দিচ্ছে না, এটা কোন গণতন্ত্র?

রোহিঙ্গারা দেশের বোঝা হয়ে রয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কেউ সাহায্য করে না, শুধু মুখে সুন্দর সুন্দর কথা বলে। তারা রোহিঙ্গাদের জন্য মায়া কান্না করে। তাদের দেশে অভিবাসীদের জায়গা দিতে পারে না তারা। রোহিঙ্গাদের জন্য কক্সবাজারের জনজীবন আজ বিপন্নপ্রায়। আমাদের ট্যুরিজম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বিদেশিরা মুখে সুন্দর সুন্দর বাণী উচ্চারণ করে, আমাদের নেত্রীর প্রশংসা করে, কিন্তু বাস্তবে সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসে না।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় বিএনপি আবার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তারা আবারও আগুন সন্ত্রাস করতে চায়। তারা হত্যার রাজনীতি করতে চায়। তাদের ছাত্র সংগঠনকে অস্ত্র মজুদ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, আমরা গণমাধ্যমে খবর দেখেছি। পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এখন সেই পরিবেশ নেই। অরাজকতা করবেন, রাজপথে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, অনেক হয়েছে আন্দোলন, এবার ঘরে ফিরে যান। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, বিএনপির আমলে দেশ হয়েছিল জঙ্গিবাদের, দুর্নীতিবাজদের, খুনিদের বাংলাদেশ।

সভাপতি-সম্পাদককে শাসালেন কাউন্সিলর মানিক : বিকালে শান্তি সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও দক্ষিণের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা দুপুর থেকেই মিছিল নিয়ে হাজির হন ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে। অন্যদের মতো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিকও গতকাল নেতা-কর্মীসহ মিছিল নিয়ে হাজির হন। তবে সেখানে তার নাম না বলায় কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে শাসিয়েছেন মানিক। মিছিল নিয়ে সামনে গিয়ে বিশৃঙ্খলা করতে থাকেন মানিক ও সমর্থকরা। একপর্যায়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে তাকে গালাগাল, হুমকি-ধমকি দিতে দেখা যায় মানিক ও তার সমর্থকদের। পরে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী গেলে তাকেও গালাগাল করা হয়। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক চৌধুরী সাইফুন্নবী সাগর মাইকে বলেন, বিশাল মিছিল নিয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিককে। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতারা চরম বিব্রত বোধ করতে দেখা যায়। চলতি বছর লালবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে এবং চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সামনেই মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও কাউন্সিলর হাসিবুর রহমানের সমর্থকদের কয়েক দফা মারামারি হয়।

 

 

সর্বশেষ খবর