মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

দরিদ্র জনগোষ্ঠী ৪১ শতাংশের কম নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

দরিদ্র জনগোষ্ঠী ৪১ শতাংশের কম নয়

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারাকাত বলেছেন, ‘দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ৪১ শতাংশের কম নয়। বস্তি ও নিম্ন আয়ের এলাকার মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮২ শতাংশ মানুষ দরিদ্র।’ গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) এবং এইচডিআরসি আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ তথ্য জানান। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিক উজ জামান, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দীন আহমেদ, এএলআরডি নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা প্রমুখ।

 ড. আবুল বারাকাত বলেন, দেশে বস্তি এলাকায় মোট জনগোষ্ঠীর ৮২ শতাংশ দরিদ্র, আর মোট জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্যের হিসাবে ৪১ শতাংশের কম নয়। যদিও সরকার বলছে, বস্তিবাসী ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ১৯ শতাংশ দরিদ্র। তার পরও অভিবাসন হচ্ছে, যাকে আমরা বলছি ‘গলাধাক্কা অভিবাসন’।

বস্তিবাসীর জীবনের চিত্র তুলে ধরে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বস্তিবাসীকে অন্য ব্যয় সংকুলান করতে খাদ্য এবং শিক্ষা ব্যয় কমাতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ অন্য বহু দারিদ্র্য বাড়ছে। নগর দরিদ্রদের ব্যাংক ঋণ নেই। অন্যদিকে নগর দরিদ্রদের আমরা অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলে আসছি। গ্রাম থেকে যে অভিবাসন হচ্ছে তা নয়। গ্রাম থেকে ‘গলাধাক্কা অভিবাসন’ হচ্ছে। বস্তি এলাকায় গড় মাসিক আয় ১২ হাজার ৭৫০ টাকা। এর মধ্যে ৭ হাজার ২৬৮ টাকা খাবারে ব্যয় হয়। আর ১ হাজার ৪০২ টাকা খরচ হয় ওষুধের পেছনে। ১০ শতাংশ খরচ করে শিক্ষা খাতে। এর মধ্যে দেখা যায় ৩০ শতাংশ মানুষ ঋণে আছে।

ড. জামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে অন্যান্য সিটি করপোরেশনের অসমতা রয়েছে। শহরের বস্তিতে সব ধরনের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় না। বস্তির মানুষকে বরং পানি গ্যাস বিদুৎ বিল শহরের অন্যান্য মানুষের তুলনায় বেশি দিতে হয়। এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, ঢাকা সিটিতে কমপক্ষে ২৫-৩০ ভাগ মানুষ বস্তিবাসী। তবে তারা সমাজের বোঝা নয়। কিন্তু তাদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত সংবিধান লঙ্ঘন করছি। সরকার এদের নিয়ে যথাযথ পরিকল্পনা করলে বস্তিবাসীর বৈষম্য দূর করা সম্ভব। আমাদের রাষ্ট্র তাদের কাজে লাগাতে পারছে না। যে কারণে এই বৈষম্য তৈরি হচ্ছে। সভাপতির বক্তব্যে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বস্তি শুধু কোনো ভূখণ্ড নয়, এটা হচ্ছে মানুষের জীবন। এই মানুষের জীবনকে জীবনের মতো করে বিকশিত করে দেওয়ার যে সুযোগ, তা বাস্তবায়ন সম্ভব। আর এটা পারবে যারা সমাজকে নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের মাধ্যমে।

সর্বশেষ খবর