বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
মহাসচিবের মুখপাত্র

ড. ইউনূসের ব্যাপারটি অবগত নয় জাতিসংঘ

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

ড. ইউনূসের ব্যাপারটি অবগত নয় জাতিসংঘ

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক ২৮ আগস্ট নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে প্রয়োজনীয় সবকিছুর দেখভাল করছে জাতিসংঘের রিফিউজি সম্পর্কিত হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর)। স্টিফেন ডোজারিক পুনরায় বাংলাদেশের জনসাধারণকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্যে। বার্মার সামরিক জান্তা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাস্তুচ্যুত করার জন্য অভিযান পরিচালনা করার পর ছয় বছর পেরিয়ে গেছে। ২৫ আগস্ট হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা মুসলমান কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে বিক্ষোভ করে, তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ওপর বৃহত্তর আন্তর্জাতিক চাপের আহ্বান জানায়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এত চেষ্টা করেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এ অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে জাতিসংঘ কীভাবে সমর্থন করতে পারে? জাতিসংঘের স্থায়ী সংবাদদাতা (বাংলাদেশ প্রতিদিন)-এর এ প্রশ্নের জবাবে স্টিফেন ডোজারিক বলেন, প্রথমত, আমি মনে করি লাখ লাখ শরণার্থীকে স্বাগত জানিয়ে আশ্রয় প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জনসাধারণের উদারতার প্রশংসা করা জরুরি এবং সবসময়ই এমন মহানুভবতার জন্যে জাতিসংঘ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আসছে। শরণার্থীদের ব্যাপারে করণীয় সবকিছু জাতিসংঘের রিফিউজি সম্পর্কিত হাইকমিশনারের নেতৃত্বে করা হচ্ছে। আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে যে, সব রোহিঙ্গা শরণার্থীর প্রত্যাবর্তন ঘটাতে হবে স্বেচ্ছায়, নিরাপদ এবং মর্যাদার সঙ্গে এবং যেখানে ফিরলে তারা নিরাপদ বোধ করবে- তেমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের অপর প্রশ্ন ছিল, ১৭ কোটির বেশি জনসংখ্যার বাংলাদেশ ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে যে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছে তা জাতিসংঘ বহুবার বলেছে। এ খাতে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তারও সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে। কিন্তু কক্সবাজার আশ্রয় শিবিরে বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনেকেই এখন নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। হতাশাগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেটওয়ার্কে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আরও জোরালো হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন সবাই। এ বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের কোনো বিশেষ পরিকল্পনা আছে কি? জবাবে ডোজারিক বলেন, কক্সবাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে কী ঘটছে তা জেনে নিতে পারেন জাতিসংঘের রিফিউজি সম্পর্কিত হাইকমিশনারের কাছ থেকে।

ড. ইউনূসের ব্যাপারটি জাতিসংঘ অবগত নয় : ‘১০০ জনেরও বেশি নোবেল বিজয়ীসহ ১৬০ জনেরও বেশি বিশ্বনেতা, যাদের মধ্যে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রয়েছেন, তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা একটি খোলা চিঠিতে সম্প্রতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে টার্গেট করে বিচার বিভাগের মাধ্যমে হেনস্তা করার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন। তারা আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলকভাবে আয়োজন করার এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। ড. ইউনূসের এই সংকটময় মুহূতে জাতিসংঘ মহাসচিবের অবস্থান কী? কারণ ড. ইউনূস জাতিসংঘের অনেক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত’- একজন সংবাদদাতার এমন এক প্রশ্নের জবাবে ডোজারিক বলেন, ‘যেমনটা এর আগেও আমরা বলেছি, জাতিসংঘ খুব গুরুত্বের সঙ্গে চায় বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন যেন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়। আর সবাই চায় নির্বাচনটা যেন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়। প্রফেসর ইউনূসের বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখব। তার মামলার বিষয়টি আমি অবগত নই।’

সর্বশেষ খবর