বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

সুন্দরী তরুণীরাই টার্গেট ছিল চীনা নাগরিকের

নিজস্ব প্রতিবেদক

উপজাতি সুন্দরী তরুণীরাই টার্গেট ছিল চীনা নাগরিক জি সেন (৫০)-এর। তাদের কাউকে চীনে নিয়ে যাওয়া, কাউকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতেন তিনি। কিছুদিন পর জি সেনের প্রকৃত চেহারা প্রকাশ পেয়ে গেলে বাধ্য হয়েই কেটে পড়তেন ভুক্তভোগীরা। বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আইনি ঝামেলায় জড়াতে না চাওয়ায় নীরবে সরে পড়তেন তারা। চীনা নাগরিকের এসব কাজের অন্যতম সহযোগী ছিলেন হীরা চাকমা। ইতোমধ্যে ১৯ বছর বয়সী এক উপজাতি তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে সেই চীনা নাগরিক এবং তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রেফতার চীনা নাগরিক গত চার মাস ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তিনি পেশায় চিকিৎসক। বাংলাদেশে বসবাসরত চীনা নাগরিকদের চিকিৎসা করতেন তিনি। হীরা চাকমা শুরু থেকেই জি সেনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে রয়েছেন। তারা একে অন্যকে বন্ধু হিসেবে পরিচয় দিতেন। উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কের ৯০ নম্বর ভবনে থাকতেন জি সেন। একই সেক্টরের ১৬ নম্বর রোডের আরেকটি ভবনে থাকেন হীরা চাকমা। তিনি ভুক্তভোগী ধর্ষিতার মতো আরও অনেক সুন্দরী তরুণীকে জি সেনের জন্য সংগ্রহ করে দিতেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। শুধু জি সেন নয়, আরও অনেক চীনা নাগরিককে সুন্দরী তরুণী সাপ্লাই দিতেন হীরা চাকমা। উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার বদরুল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। প্রাপ্ত তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও অনেক তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চীনা নাগরিকের সঙ্গে হীরা চাকমাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। এইচএসসি প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত সেই ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগ তারা দুজনে তাকে চীনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। গত ২৭ আগস্ট থেকে তাকে আটকে রেখে দুই দফা ধর্ষণ করেন। এই মর্মে তিনি থানায় অভিযোগও করেন। পরে গত সোমবার রাতে উত্তরার ১৬ নম্বর সেক্টর থেকে চীনা ওই নাগরিকসহ তার সহযোগীকে গ্রেফতার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। জি সেন ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে চীনে নিয়ে যাবেন এবং বিয়ে করবেন বলে প্রলোভন দেন। মেয়েটি লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন চাকরি করেন। চীনের নাগরিকের সহযোগী হীরা চাকমার সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে ওই কলেজছাত্রীর পরিচয় হয়। পরিচয় সূত্র ধরে রবিবার একটি কফি শপে ওই ছাত্রীকে নিয়ে যায় তারা দুজন। এরপরই তাকে বাসায় নিয়ে আটকে রাখা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ আলম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। ওই চীনা নাগরিকসহ তার সহযোগীকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানোর পর আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

সর্বশেষ খবর