রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

হাজার কোটি টাকা তো ব্যাগে নিয়ে যায়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাজার কোটি টাকা তো ব্যাগে নিয়ে যায়নি

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, দেশের ব্যাংকগুলো থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা চলে গেছে। এগুলো তো ব্যাগে করে নিয়ে যায়নি। কোনো ব্যাংকের মাধ্যমে নিয়ে গেছে। কোনো অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। বেনামে গেলেও অ্যাকাউন্টের তথ্য ব্যাংকগুলোর কাছে আছে। ১০ লাখ টাকার ওপরে লেনদেন হলে রেকর্ড থাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভারে। তারা চাইলেই টাকা কোথায় গেছে এটা জানা সম্ভব। কারণ ব্যাংকিং সিস্টেমে সব তথ্যই রেকর্ড থাকে। টাকা কোথায় গেছে, কার কাছে সবই জানা যায়। গতকাল অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামে (ইআরএফ) আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম উপস্থিত ছিলেন। ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় জেলগেটে। এটা তো অনেক পুরনো একটি সিস্টেম। সে কোথায় টাকা নিয়ে গেছে এটা জেলগেটে গিয়ে কেন জিজ্ঞাসা করতে হবে। তাহলে সিস্টেম ডিজিটাল করে লাভ কী? ব্যাংক চাইলে তার লেনদেনের সব তথ্যই বের করতে পারবে। সে কোন কোন জায়গায় টাকা পাঠিয়েছে সবই জানা সম্ভব। তিনি বলেন, কানাডার বেগমপাড়া, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারের তথ্য আমরা শুনি। যেখানে আমরা শুনি-জানি সেখানে ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিগুলো অবশ্যই জানে কিন্তু বলে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, যেকোনোভাবে অর্থপাচার হোক না কেন তা দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতি অর্থাৎ অর্থপাচার হলে দেশের ক্ষতি হবে। আগে শুধু আমদানি-রপ্তানিতে দাম কমবেশি দেখিয়ে অর্থপাচার হতো। এখন অর্থপাচারের অনেক মাধ্যম সৃষ্টি হয়েছে। যে যেভাবে সুযোগ-সুবিধা পায় সে সেভাবেই পাচার করে। অর্থপাচার বাড়লে রেমিট্যান্স কমে যাবে। তিনি বলেন, যারা দুর্নীতি করে অর্থ উপার্জন করছে তারা যদি মনে করে দেশে এ অর্থ রাখা নিরাপদ নয়, তাহলে তারা যেকোনো কৌশলে অর্থপাচার করবে। এখন অনেকে দ্বৈত নাগরিক হওয়ার জন্য বিদেশে অর্থ নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, অর্থপাচারের আরেকটি সহজ মাধ্যম অফশোর ব্যাংকিং। এখন অনেক ব্যাংক বিদেশে অফশোর ব্যাংকিং চালু করেছে, যার মাধ্যমে চাইলে অর্থপাচার করা যায়। কারণ অফশোর ব্যাংকিংয়ের শাখায় কত অর্থ সংগ্রহ করছে তার কোনো হিসাব নেই। নিজেদের মতো অর্থ সংগ্রহ করে ইচ্ছে মতো রেখে দিচ্ছে। আর ব্যাংকের মালিকরা চাইলে তার কোনো হিসাবই থাকে না। প্রণোদনা দিয়ে রেমিট্যান্স বাড়ানো সম্ভব নয় জানিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আশানুরূপ রেমিট্যান্স আসছে না। আর আসবেও না। রেট বাড়িয়ে রেমিট্যান্স আনা যাবে না। কারণ বিদেশে অর্থের চাহিদা যদি না কমে তাহলে কোনোভাবেই পাচার রোধ করা যাবে না। যাদের অর্থ নেওয়ার প্রয়োজন হবে তারা যেকোনো উপায়ে অর্থপাচার করে নিয়ে যাবেই।

সর্বশেষ খবর