রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

টেস্টের রিপোর্ট পেতে সিরিয়ালে ৩ ঘণ্টা

শরিফুল ইসলাম সীমান্ত

রাজধানীতে দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু টেস্টের রিপোর্ট নেওয়ার লাইনে বাড়ছে রোগী ও স্বজনদের ভিড়। রিপোর্ট পেতে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে সিরিয়ালে। গতকাল রাজধানীর কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে এমনই চিত্র। দুপুরে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ডেঙ্গু টেস্টের রিপোর্ট প্রদান বুথ ঘুরে দেখা যায়, ২০০ থেকে ৩০০ মানুষ টেস্টের রিপোর্ট নিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। দীর্ঘ সময় পর যারা রিপোর্ট হাতে বেরিয়ে আসছেন একই সঙ্গে বিজয়ের হাসি আর ক্লান্তি ভর করছে তাদের চেহারায়। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রিপোর্ট পেতে কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে তাদের। মিরপুরের পাঠাও চালক হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মেয়ের বয়স তিন বছর। তিন ঘণ্টা গরমের মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে ডেঙ্গু পজিটিভের রিপোর্ট পেলাম। কথা হয় সিরিয়ালের মাঝামাঝি অবস্থানরত মিরপুরের আরেক বাসিন্দা মুশফিকুরের সঙ্গে। জানালেন, ১৩ বছর বয়সী ছোট ভাইয়ের তিন দিন হলো জ্বর। ২ ঘণ্টা লেগেছে সিরিয়ালের মাঝ পর্যায়ে আসতে। বুথের কাছে গিয়ে দেখা গেল, টেবিল ভর্তি ডেঙ্গু টেস্টের রিপোর্ট নিয়ে গলদঘর্ম হচ্ছেন দুজন কর্মচারী। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে অবশেষে বুথের কাছে পৌঁছানো রোগীর আত্মীয়স্বজনদের সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। নিরাপত্তাকর্মীরা আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। রাতে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মো. রফিকুল ইসলামের। ছেলেকে নিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে মালিবাগের পদ্মা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এসেছেন তিনি। শিশুদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকায় দ্রুতই পেয়ে গেছেন টেস্টের জন্য রক্ত দেওয়ার সিরিয়াল। কিন্তু রাতে রিপোর্ট সংগ্রহ করতে এসে বেধেছে বিপত্তি। রাত ৮টায় রিপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও উপস্থিত হয়ে জানতে পারেন, রাত ৯টার পর দেওয়া হবে রিপোর্ট। রফিকুল ইসলামের মতোই আরও প্রায় ৫০০ মানুষ এসেছেন বিভিন্ন পরীক্ষা করাতে। যাদের ৯০ ভাগই এসেছেন ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে। মানুষের প্রচুর ভিড় থাকায় এসির মধ্যেও ঘাম ঝরছিল রিপোর্ট নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের। বেসরকারি কিছু হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নারী ও শিশুদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা থাকলেও অধিকাংশ হাসপাতালেই তা নেই। আবার পরীক্ষার জন্য পৃথক ব্যবস্থা থাকলেও রিপোর্ট সংগ্রহের ক্ষেত্রে সেই সুবিধা নেই। ফলে ভোগান্তি বাড়ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের।

সর্বশেষ খবর