সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সুপার ফোরের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

আসিফ ইকবাল

সুপার ফোরের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

শান্ত ও মিরাজ দুজনের সেঞ্চুরিতে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বড় স্কোর করে বাংলাদেশ -এএফপি

জিততেই হবে। আকাশসমান চাপের এমন সমীকরণের ম্যাচটি জিতেছে বাংলাদেশ। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ৮৯ রানের পর্বতসমান ব্যবধানে জিতে সুপার ফোরের আশা টিকিয়ে রেখেছে সাকিব বাহিনী। অবশ্য সমীকরণের মারপ্যাঁচ এখনো বাকি। সুপার ফোরে খেলতে টাইগারদের তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে আগামীকালের শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান ম্যাচের দিকে। লাহোরের ম্যাচটি যদি আফগানরা হেরে যায়, তাহলে রান রেটের বিন্দুমাত্র প্রয়োজন হবে না। সরাসরি উঠে যাবে সুপার ফোরে। যদি শ্রীলঙ্কা হেরে যায়, তখন রান রেটের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে সাকিবদের। গতকাল লিগ পর্বের ম্যাচে বাংলাদেশের ৫ উইকেটে ৩৩৪ রানের জবাবে আফগানিস্তান ৪৪.৩ ওভারে অলআউট হয় ২৪৫ রানে।           

স্কোয়াডে থেকেও জ্বরের জন্য শেষ মুহূর্তে এশিয়া কাপে যেতে পারেননি লিটন দাস। পিঠের পুরনো ব্যথায় নিজে থেকে সরে দাঁড়ান তামিম ইকবাল। দলের সেরা দুই ওপেনার না থাকায় নিশ্চিত করেই শক্তি হ্রাস পেয়েছে টাইগারদের। ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওপেনিং জুটিতে অভিষিক্ত তানজিদ তামিম ও মোহাম্মদ নাঈম ৪ রানের বেশি ভিত দিতে পারেননি। দুই ওপেনারের ব্যর্থতা সামলাতে পারেননি পরের ব্যাটাররা। গতকাল লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি ছিল ‘বাঁচা-মরার’। জীবনবাজির ম্যাচটিতে তিন পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে সাকিব বাহিনী। ওপেনিংয়ের পরিবর্তনটা বাজিমাত করেছে শতভাগ। ওপেনার তানজিদকে সাজঘরে বসিয়ে অধিনায়ক সাকিব নতুন বলে খেলতে পাঠান মেহেদী হাসান মিরাজকে। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ওপেন করেই ইতিহাস লেখেন স্পিন অলরাউন্ডার মিরাজ। খেলেন ১১২ রানের নান্দনিক ইনিংস। শুধু মিরাজ নন, গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের উইকেটে স্বপ্নের ইনিংস খেলেন নাজমুল হোসেন শান্তও। শ্রীলঙ্কা ম্যাচের ১১ রানের আক্ষেপ ঘুচিয়ে খেলেন ১০৪ রানের ইনিংস। ওয়ানডে ক্রিকেটের এক ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরি বাংলাদেশের এই প্রথম নয়, এর আগে জোড়া সেঞ্চুরির রেকর্ড রয়েছে আরও ৪টি।

লাহোরে ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে মিরাজ ও শান্তের জোড়া সেঞ্চুরিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ৩৩৪ রান করে বাংলাদেশ। যা আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ দলগত স্কোর। আগের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ৩০৬ রান, চট্টগ্রামে ২০২২ সালে। সব মিলিয়ে টাইগারদের ৪১৭ ওয়ানডেতে এটা তৃতীয় দলগত সর্বোচ্চ। মার্চে সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ উইকেটে ৩৪৯ রান করেছিল বাংলাদেশ। সেটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলগত স্কোর।

লাহোরে টাইগাররা সর্বশেষ খেলেছিল ২০০৮ সালে। এশিয়া কাপের ওই আসরে শ্রীলঙ্কার কাছে হারলেও হারিয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। মোহাম্মদ আশরাফুলের সেঞ্চুরিতে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩০০ রান করেছিল বাংলাদেশ। ১৫ বছর পর পুনরায় লাহোরে খেলতে নামেন সাকিবরা। টস জিতে ব্যাটিং করেন টাইগাররা। নাইম ও মিরাজের ওপেনিং জুটি ৬০ রানের ভিত দেয়। একই রানে বিদায় নেন তৌহিদ হৃদয়। এরপর ইতিহাস লেখে মিরাজ-শান্ত জুটি। রিটায়ার্ট হার্ট হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৭৯ ম্যাচ ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন মিরাজ। ১১২ রানের ইনিংসটি খেলেন ১১৯ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায়। আগের সেঞ্চুরির ইনিংসটি ছিল ভারতের বিপক্ষে ১০০ রানে। প্রথমবার ওপেন করেন ২০১৮ সালে দুবাইয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে। ভারতের বিপক্ষে ৩২ রান করেছিলেন মিরাজ। নাজমুল শান্ত ২৯ ম্যাচে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন। ১০৪ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ১০৫ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায়। ৪১৭ ওয়ানডেতে এর আগে জোড়া সেঞ্চুরির রেকর্ড রয়েছে আরও ৪টি। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিম ইকবাল (১৩২) ও মুশফিকুর রহিম (১০৬) জোড়া সেঞ্চুরি করেছিলেন। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জোড়া সেঞ্চুরি করেন সাকিব আল হাসান (১১৪) ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (১০২*)। ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইমরুল কায়েশ (১১৫) ও সৌম্য সরকার ১১৭, ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তামিম (১২৮) ও লিটন দাস (১৭৬) রান করেন। জোড়া সেঞ্চুরির সবগুলো ম্যাচেই জয় তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ।

সর্বশেষ খবর