ঢাকা কাস্টম হাউসের গুদামে নেই কোনো সিসি ক্যামেরা। ফলে চুরি হওয়ার কোনো আলমতও খুঁজে পাচ্ছে না তদন্তসংশ্লিষ্টরা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসের গুদামের লকার থেকে ৫৫ কেজির বেশি সোনা চুরির মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার। গতকাল সন্ধ্যায় ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, বিমানবন্দর থানায় সোনা গায়েবের মামলাটি ডিবি উত্তরা বিভাগের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এদিকে সোনা চুরির ঘটনায় করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৫ অক্টোবর দিন ধার্য করেছে আদালত। এর আগে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেন, বিমানবন্দর কাস্টমসের গুদাম থেকে সোনা গায়েবের বিষয়টি গোয়েন্দা পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে ছায়া তদন্ত করছে। একাধিক টিম কাজ করছে। কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সোনা চুরির এই ঘটনা ঢাকা শুল্ক বিভাগের নজরে আসে গত ২ সেপ্টেম্বর। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় পরদিন রবিবার। বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসের নিজস্ব গুদামে দিনভর ইনভেন্টরি শেষে ৫৫ কেজি সোনা চুরি বা বেহাত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় চার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়ী করে মামলার কথা জানালেও মামলা হয়েছে অজ্ঞাতদের আসামি করে। পুরো ঘটনা তদন্তের জন্য কাস্টমসের যুগ্ম-কমিশনার মিনহাজ উদ্দীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম গঠন করেছে কাস্টমস হাউস। রবিবার রাতে ঢাকা শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মামলাটি করেন। মামলার এজহার থেকে জানা যায়, মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের। শনিবার রাত সোয়া ১২টা থেকে পরদিন রবিবার সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে কে বা কারা গুদামের আলমারির লকার ভেঙে সোনাগুলো নিয়ে যায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চুরি হওয়া এসব সোনার মূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোর্শেদ আলম বলেন, বিমানবন্দর রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেপিআই)। বিমানবন্দরের ভিতরের সব জায়গা সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারিসহ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার মধ্যে রাখা হয়। অথচ কাস্টমসের গুদামে সিসিটিভি না থাকাটা বড় প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। স্বর্ণ চুরির আলামত নেই বললেই চলে। একটি বিষয় পরিষ্কার, কাস্টম হাউসের নিজস্ব গুদামে যার-তার প্রবেশের সুযোগ নেই। সুতরাং বাইরের কেউ এসে গুদাম থেকে স্বর্ণ নিয়ে যেতে পারবেন না। আর বাইরের কেউ চুরি করতে এলে তো সবই নিয়ে যাওয়ার কথা। একটি-দুটি করে তো নেওয়ার কথা না। আদালত সূত্র জানায়, মামলাটির এজাহার সোমবার আদালতে পৌঁছায়। ঢাকার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত তা গ্রহণ করে বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক খোরশেদ আলমকে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।