বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক

ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে তিন সমঝোতা

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, কৃষি সহযোগিতা ও স্বাস্থ্য খাতে তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া। গতকাল ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি দুই দেশের পক্ষে জ্বালানি ও কৃষি খাতের সমঝোতা স্মারকে সই করেন। এ সময় দেশটির বাজারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের প্রবেশ সহজ করার জন্য ইন্দোনেশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা। পরে ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বুদি গুনাদি সাদিকিনের সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বাস্থ্য খাতে সহযোহিতার সমঝোতা স্মারক সই করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জ্বালানি খাতে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সইয়ের লক্ষ্য হলো বাংলাদেশে আধুনিক ও নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য প্রচলিত জ্বালানির দীর্ঘমেয়াদি বিক্রি ও সরবরাহ প্রসার করা। কৃষির উদ্দেশ্য হলো উৎপাদন, বিপণন, প্রযুক্তি হস্তান্তর প্রসার এবং কৃষি ক্ষেত্রে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা বিনিময়ে সহযোগিতা বাড়ানো। সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। তিনি বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণের মধ্যে ভারসাম্যহীনতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়ার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে এই ব্যবধান কমানো যেতে পারে।

আসিয়ান অঞ্চলে ইন্দোনেশিয়াকে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে মন্ত্রী মোমেন বলেন, এখনো দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে শিগগিরই দ্বিপক্ষীয় অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার ব্যাপারে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতাসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার জন্য বাংলাদেশের আহ্বান এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গাদের) প্রত্যাবাসনসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন তারা। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথাও তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারসুদি। বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে সাংস্কৃতিক মিল এবং জনগণের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক বন্ধন রয়েছে উল্লেখ করে তিনি দুই দেশের মধ্যে একটি শক্তিশালী ও আরও প্রাণবন্ত সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সহযোগিতা ও অংশীদারির নতুন উপায় খোঁজার ওপর জোর দেন। এ ছাড়া, মন্ত্রীরা জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর সম্ভাবনার ওপরও জোর দেন। ৪৩তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন এবং ১৮তম ইস্ট-এশিয়া সামিটে অংশ নিতে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর আমন্ত্রণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন জাকার্তা সফর করছেন। তিনি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল এবং এর বাইরের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অংশগ্রহণে দুটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করছেন।

সর্বশেষ খবর