শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

১৯ কেজি সোনা চুরির রহস্য চার বছরেও অনুদঘাটিত!

বেনাপোল প্রতিনিধি

বেনাপোল কাস্টমস থেকে সোনা চুরির সঙ্গে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে সোনা চুরির ঘটনা এবং স্টাইল একই সূত্রে গাঁথা কিনা- তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, স্থান কাল এবং সোনার পরিমাণ আলাদা হলেও ঢাকার মতো বেনাপোলেও সেদিন সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। চুরির দিন জানা যায়, এক মাস ধরে বন্ধ ছিল সিসি ক্যামেরা। ভোল্ট তালাবদ্ধ ছিল, কিন্তু ভিতরে সোনা ছিল না।

২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর সকালে জানা গিয়েছিল, কাস্টমস হাউসের দোতলার একটি সুরক্ষিত কক্ষে তালাবদ্ধ ভোল্ট থেকে চুরি হয়ে গেছে ১৯ কেজি ৩০০ গ্রাম সোনার বারসহ বিভিন্ন ধরনের গহনা। নি-িদ্র নিরাপত্তার চাদরে কাস্টমস ভবন সুরক্ষিত থাকলেও চুরি হওয়া ভোল্টের মধ্যে চোরেরা রহস্যজনকভাবে রেখে যায় বিভিন্ন দেশের মুদ্রার সমপরিমাণ নগদ প্রায় ৩ কোটি টাকা এবং প্রতিটি ১০ গ্রাম ওজনের ৭৫টি সোনার বার। কাস্টমস হাউসের পুরনো দোতলা ভবনের যে কক্ষটিতে লোহার ভোল্ট বা সিন্দুক রাখা ছিল সেটি ছিল অনেক বেশি সুরক্ষিত। বাইরের যে কেউ সেখান থেকে চুরি করে পালিয়ে যেতে পারার কথা নয়। তাছাড়া সোনা চুরি হওয়ার স্থান থেকে সার্বক্ষণিক নজরদারির প্রধান গেটটি ছিল মাত্র ৫০ গজ দূরত্বে।

অভিযোগ অনুযায়ী, সোনা চুরির ঘটনাটি প্রথম থেকেই রহস্যজনক। হাউসের বাইরে থেকে চোর এসে চুরি করলে বাকি ৭৫টি বার এবং নগদ ৩ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা কেন ফেলে যাবে- এ প্রশ্নের জবাব তদন্তকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের কাছে এখনো মেলেনি। ফলে ৪ বছর ধরে অধরা রয়ে গেছে প্রায় ২০ কেজি পরিমাণ সোনা লুটের রহস্য।

প্রসঙ্গত, মোটা দাগের সোনা চুরির এ ঘটনায় তখন হইচই পড়ে গিয়েছিল। যশোর ও খুলনা থেকে ছুটে এসেছিলেন আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার লোকজন। ১১ দিনেও কোনো কুলকিনারা না করতে পেরে তৎকালীন রাজস্ব কর্মকর্তা ইমদাদুল হক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে পোর্ট থানা বেনাপোলে একটি চুরি মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য যশোর সিআইডিকে দায়িত্ব দিয়েছিল পুলিশ হেডকোয়ার্টার।

পরে মামলার তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক জাকির হোসেন- আজিবর এবং শাকিল নামে ২ জন অনিয়মিত বহিরাগত কাস্টমস কর্মচারীকে আটক এবং জিজ্ঞাসাবাদ করে জেলহাজতে পাঠিয়েছিলেন। এরপর দ্বিতীয় কর্মকর্তা হাসান ইমাম গোডাউনের দায়িত্বে থাকা সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহাবুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিলেন। তারপর দীর্ঘ সময়ে ৩ দফা তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের পর পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম- সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম মৃধা, অলিউল্লাহ এবং আরশাদ হোসেনকে আটক করেন। তিনি জানান, আটককৃত কাস্টমস কর্মকর্তা বিশ্বনাথ কুণ্ডু এবং শাহাবুল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করার কারণে ধৃত ৭ জনের নামে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। মামলটি বর্তমানে বিচারিক কার্যক্রমে রয়েছে।

সর্বশেষ খবর