রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
গণমিছিলে ফখরুল

মানুষ আর এ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উত্তাল ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মানুষ আর এ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রোদ বৃষ্টি সত্ত্বেও বিএনপি গণমিছিলে মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে মানুষ সরকারকে ‘না’ জানিয়ে দিয়েছে। দেশের মানুষ এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তিনি গতকাল বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের গণমিছিল শেষে সমাবেশে বক্তৃতা করছিলেন। এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ গণমিছিল করে বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অনৈতিক সব কাজ করছে। দেশের জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক করে রেখেছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তাঁর দাবি, এই মুহূর্তে খালেদাকে  মুক্তি দিতে হবে। কারাগারে আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। সবার মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজ জনগণ রাস্তায় নেমে যে আওয়াজ তুলছে সে আওয়াজ কেড়ে নেওয়ার শক্তি আওয়ামী লীগের নেই। ঐক্যের ডাক দিয়ে ফখরুল বলেন, ওরা যতই চক্রান্ত করুক, কোনো লাভ নেই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এক বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেরা আক্রমণ করে বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপাবে। দলের নেতা-কর্মীদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনেই সরকারকে পরাজিত করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে জনগণের সরকার করতে হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে আওয়ামী লীগের কেউ নিরাপদে থাকতে পারবে না। আমরা বলতে চাই আওয়ামী লীগ যদি আবার ক্ষমতায় আসে দেশের একজন মানুষও নিরাপদে থাকতে পারবে না। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে না। তাই এ আপদ বিদায় করতে হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে। খালেদা জিয়া যদি বিদেশে চিকিৎসা না পায়, তাহলে আর কেউ যেন বিদেশে চিকিৎসার জন্য সুযোগ না পায়। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আলাদা আলাদাভাবে গণমিছিল নিয়ে যোগ দেয়। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি রামপুরা বেটার লাইফ হাসপাতালের সামনে থেকে শুরু হয়ে আবুল হোটেল, মালিবাগ রেলগেট, মৌচাক, মালিবাগ মোড়, শান্তিনগর, কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসে। এ ছাড়া একই সময়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি কমলাপুর থেকে শুরু হয়ে পীরজঙ্গি মাজার, আরামবাগ, ফকিরাপুল মোড় হয়ে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসে। গণমিছিলে যোগ দিতে বেলা ১টার পর থেকে নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করে। ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, আ ন ম সাইফুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মো. সুমন ভূইয়া ও সদস্য সচিব বদরুল আলম সবুজসহ অনেকে মিছিল নিয়ে আসেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতা-কর্মী বাড়তে থাকে। উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন ইউনিট ও অঙ্গ-সংগঠনের ব্যানারে নেতা-কর্মীরা যোগ দেন। এ ছাড়াও বিএনপির সমমনা দলগুলোও গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে একই কর্মসূচি পালন করে।

সর্বশেষ খবর