রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
শান্তি সমাবেশে কাদের

বাইডেনের সেলফি দেখে বিএনপির পশ্চাৎযাত্রা শুরু

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উত্তাল ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাইডেনের সেলফি দেখে বিএনপির পশ্চাৎযাত্রা শুরু

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এতদিন বিএনপি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দিকে তাকিয়ে ছিল। তারা ভেবেছিল আমেরিকা তাদের ক্ষমতায় বসাবে। কিন্তু জি২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সেলফি দেখে বিএনপির এখন পশ্চাৎযাত্রা শুরু হয়েছে। তাদের নেতা-কর্মীরা হতাশার নদীতে হাবুডুবু খাচ্ছে।

গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দেশব্যাপী ‘বিএনপির সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের’ প্রতিবাদে এই সমাবেশ করা হয়। এ ছাড়াও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হলে পৃথক শান্তি সমাবেশ করা হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি খেলায় হেরে গেছে। খালি নির্বাচনটা হওয়া বাকি, ফাইনাল খেলায়ও হেরে যাবে। এর মধ্যে শুধু ফাউল করবে, হলুদ আর লাল কার্ড খাবে। এতদিন (বিএনপি) শুধু লাফালাফি করছে। বিএনপি সামনে কিছু দেখে না। দেখে অন্ধকার। দেখে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। দিনের আলোতেও অমানিশার দিশা। ঘুম হারাম হয়ে গেছে। একটা তো পালিয়েছে। বাকিরা কে কোন দিকে পালাবে সেই চিন্তায় ঘুম আসে না। তিনি বলেন, ওপরে ওপরে আন্দোলন, তলে তলে নির্বাচন। সারা বাংলায় খবর নেন। সব সিটে (আসন) ক্যান্ডিডেট (প্রার্থী) দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এখন দুই, তিনজন না, যার যত টাকা, সে তত বেশি লন্ডনে পাড়ি দেয়। ওখানে গিয়ে টাকা জমাচ্ছে। এত টাকা আসে কোথা থেকে? টাকা উড়ে আকাশে, টাকা উড়ে বাতাসে! নির্বাচন না করলে তারেক রহমান মনোনয়ন বাণিজ্য করবে কীভাবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে নতুন একটা খবর আছে। দিল্লিতে কী হচ্ছে। জি২০ (সম্মেলন)। এতদিন বিএনপি আটলান্টিকের ওপারে হোয়াইট হাউসের দিকে তাকিয়ে ছিল। বাইডেন সাহেব নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আওয়ামী লীগকে হটিয়ে তাদের ক্ষমতায় বসাবে। বাইডেন সাহেব নিজেই সেলফি তুললেন শেখ হাসিনার সঙ্গে। সঙ্গে আবার পুতুলও (সায়মা ওয়াজেদ পুতুল) ছিল। এই দৃশ্য দেখে বিএনপির এখন কী হবে? এখন কোন যাত্রা, পতন যাত্রা না পশ্চাৎযাত্রা? এখন পেছনের দিকে বিএনপিকে যেতে হচ্ছে। কোথায় বিক্ষোভ? কোথায় বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউ, উত্তাল তরঙ্গমালা। ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল বলেছেন- বাংলাদেশ নাকি বৃহৎ শক্তির বলয়ে চলে গেছে। আমি বলতে চাই- এ বলয় বন্ধুত্বের বলয়, এখানে কোনো শত্রুতা নেই। জাতির পিতাই বলে গেছেন ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’। এই নীতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বজায় রেখেছেন। আগামী দিনে প্রমাণ হবে শত্রুতা কারও সঙ্গে নয়, বাংলাদেশ সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চায়। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ফখরুল সাহেব এখন কী করবেন? সিঙ্গাপুর থেকে শলা-পরামর্শ নিয়ে এসেছেন, এখানে এসে এক দফার আন্দোলন করবেন। এ আন্দোলন তো এখন ভুয়া। তিনি বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে খেলা হবে। ফাইনাল খেলা হবে। তারপর দেখা যাবে কত ধানে কত চাল। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রস্তুত হয়ে যান। বৃষ্টি-বাদল-বর্ষায়। বাংলাদেশ লুটপাট, ষড়যন্ত্র, দুর্নীতিবাজ, স্বাধীনতাবিরোধী, জঙ্গিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়ে যাবে। খেলা হবে অবিরাম। শান্তি সমাবেশ আগামী নির্বাচন পর্যন্ত চলবে বলেও জানান তিনি। সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। কারও ষড়যন্ত্রে এ দেশের জনগণ বিভ্রান্ত হবে না। তারা আবারও নৌকায় ভোট দেবে। শিক্ষার আলোতে আলোকিত হবে। অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করছে। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর আসবে না। নির্বাচন হবে সংবিধান মেনে। সেই নির্বাচনে আপনারা আসবেন সেটা আমরা আশা করি। আমরা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চাই না। বিদেশিরা আপনাদের সঙ্গে নাই। ড. ইউনূসের ওপর ভর করেছেন এটাও ব্যর্থ হবে। ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, আমরা শেখ হাসিনার কর্মী। আন্দোলন-সংগ্রাম কাকে বলে আমরা জানি। তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী। আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, শেখ হাসিনার কর্মী আমরা বিশ্বাস করি- যতই ষড়যন্ত্র, পাঁয়তারা করুন না কেন, যতই আবোল-তাবোল কথা বলুক না কেন, আমরা তার দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ষড়যন্ত্রের মেঘ কেটে যাচ্ছে, আবার সূর্যের আলো দেখা যাচ্ছে। বিএনপির সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতায় এসে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। সেই লক্ষ্যে আপনারা প্রস্তুত থাকুন। সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান, হাজী ইসমাইল, শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল সাত্তার মাসুদ, আবুল হোসেন, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, মোর্শেদ কামাল, মিরাজ হোসেন, আকতার হোসেন, গোলাম সারোয়ার কবির, আবুল কালাম আজাদ, সদস্য গিয়াস উদ্দিন পলাশ প্রমুখ।

 

সর্বশেষ খবর