মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিরতিহীন কর্মসূচিতে বিএনপি

নেতা-কর্মীদের ঢাকামুখী করতে পাঁচ বিভাগে রোডমার্চ

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

বিরতিহীন কর্মসূচিতে বিএনপি

সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে নেতা-কর্মীদের ঢাকামুখী করতে পাঁচ বিভাগে রোডমার্চ করবে বিএনপি। ১৬ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের পাঁচ বিভাগে তারুণ্যের রোডমার্চ করবে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। রোডমার্চ শেষে চলতি মাসের শেষে বা আগামী মাসের শুরুতে রাজধানীতে মহাসমাবেশের মাধ্যমে দাবি আদায়ে সমমনা দলগুলো নিয়ে বিরতিহীন কর্মসূচিতে যাচ্ছে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এবার যে আন্দোলন হবে, সেটা চূড়ান্ত পর্যায়ের। এ আন্দোলনে বাংলাদেশের সব মানুষ সম্পৃক্ত হবে এবং জনগণ তাদের অধিকার আদায় করে নেবে। তিনি বলেন, এ আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যারা আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছে, আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা অতি শিগগির চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করব।

পাঁচ বিভাগে রোডমার্চ : ১৬ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের পাঁচ বিভাগে তারুণ্যের রোডমার্চ করবে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। ভোটাধিকারবঞ্চিত তরুণ ভোটারদের সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতেই নতুন কর্মসূচি দিচ্ছে তিন সংগঠন। ইতোমধ্যে তারা এ রোডমার্চের একটি খসড়া তালিকা তৈরি করেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ বিষয়টি চূড়ান্ত হবে বলে জানা গেছে। খসড়া তালিকা অনুযায়ী ১৬ সেপ্টেম্বর রংপুর থেকে সৈয়দপুর দশমাইল হয়ে দিনাজপুর, ১৭ সেপ্টেম্বর বগুড়া থেকে সান্তাহার-নওগাঁ হয়ে রাজশাহী, ২১ সেপ্টেম্বর ভৈরব থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-হবিগঞ্জ- মৌলভীবাজার হয়ে সিলেট, ২৬ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহ থেকে যশোর- নোয়াপাড়া হয়ে খুলনা এবং ৩০ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা থেকে ফেনী-মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত এ রোডমার্চ হবে। এর আগে দেশের ছয় বিভাগে তারুণ্যের সমাবেশ করেছিল যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। এরপর ২২ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশ থেকে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছিল বিএনপি।

আসছে বিরতিহীন কর্মসূচি : সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে কিছুটা ছন্দপতনের পর ফের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় বিএনপি। এবার বিরতিহীন কর্মসূচিতে যাচ্ছে দলটি। এক দফা দাবিতে ১২ জুলাই চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। ওই মাসে কয়েকটি কর্মসূচিও পালন করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি কেন্দ্র করে আন্দোলন হোঁচট খায়। এরপর দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে আদালত সাজার রায় দিলে এর প্রতিবাদে রাজপথে কিছুদিন সক্রিয় থাকে দলটি। এরপর ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কেন্দ্র করে কর্মসূচি পালন করে দলটি। বিশেষ করে ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালিতে লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর সমাগমে বিএনপির নীতিনির্ধারক মহলে এনে দেয় স্বস্তি। এরই মধ্যে মহাসচিবসহ কয়েকজন নেতা বিদেশে থাকায় আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি দলটি। তবে এবার সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের চতুর্মুখী প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আন্দোলনের সফল পরিণতি দেখতে চান সবাই। এজন্য দাবি আদায়ে মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে কঠোর কর্মসূচি চান নেতা-কর্মীরা। এক দফার আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ দিতে ইতোমধ্যে ছক তৈরি করেছে বিএনপি। এবার বিরতি নয়, আগামীর মাসের শুরু বা মাঝামাঝি থেকেই বিরতিহীনভাবে চলবে কর্মসূচি। এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এ সরকারের পতন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এ সরকারের কবল থেকে রক্ষা পেতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি চূড়ান্ত আন্দোলনে প্রস্তুত হচ্ছে। স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমরা আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে আছি। অচিরেই তা চূড়ান্ত রূপ নেবে। এবার যে কর্মসূচি দেওয়া হবে, তা সরকার পতন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।’

সর্বশেষ খবর