বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। তিনি হচ্ছেন দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি। গতকাল এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তাঁর এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের দিন থেকে কার্যকর হবে। আর সুপ্রিম কোর্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২৫ সেপ্টেম্বর অবসরে যাবেন। ২৬ সেপ্টেম্বর বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতিকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মাহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক বিচারপতি জনাব ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশর প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করিয়াছেন। এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ হইতে কার্যকর হইবে।’

এদিকে বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী পবিত্র ওমরাহ পালন করতে সৌদি আরব গেছেন। তাঁর অনুপস্থিতির সময়ে প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালন করবেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। এ প্রজ্ঞাপন অনুসারে, প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতকালীন অর্থাৎ ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অথবা প্রধান বিচারপতির যাত্রার তারিখ হতে পুনরায় স্বীয় কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালন করবেন। সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানায়, পবিত্র ওমরাহ পালনে প্রধান বিচারপতি ১১ সেপ্টেম্বর বিকালে সৌদি আরব গেছেন। প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৫৯ সালের ১১ জানুয়ারি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম ডা. আখলাকুন হোসাইন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের মায়ের নাম মরহুমা বেগম হোসনে আরা হোসাইন। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস, এমএসএস ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে জেলা বারের সনদপ্রাপ্ত হন। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে এবং ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে ২০০৯ সালের ৩০ জুন যোগদান করেন এবং ২০১১ সালের ৬ জুন একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর সদস্য হিসেবে ২০১২ সালের ২৫ মার্চ যোগদান করেন এবং ১৩ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে এ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হয়ে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ কর্মরত থাকাকালীন ১১টি মামলার রায় প্রদান করা হয়েছে। তিনি ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ‘অবর্ণনীয় নির্মমতার চিত্র : একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ : একজন যুদ্ধশিশুর গল্প ও অন্যান্য’ নামক দুটি গ্রন্থের রচয়িতা বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনের নিয়মিত লেখক।

সর্বশেষ খবর