বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আন্তর্জাতিক সংকটেও খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক সংকটেও খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষিত

সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চলমান আন্তর্জাতিক সংকটেও দেশে খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষিত আছে। খাদ্যে এ স্বয়ংসম্পূর্ণ অবস্থান বজায় রাখতে সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

গতকাল বিকালে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে সরকারদলীয় এমপি শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাবনায় নির্মাণাধীন ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২০২৫ সালের মধ্যে চালু হবে।

কভিড মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বে খাদ্যপণ্যসহ সব ক্ষেত্রে জোগানব্যবস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে শহীদুজ্জামানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এ সংকট মোকাবিলার মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার প্রতিনিয়ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ অবস্থান বজায় রাখতে সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। চলমান আন্তর্জাতিক সংকটেও দেশে খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষিত আছে। কভিড মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বে খাদ্যপণ্যসহ সব ক্ষেত্রে জোগানব্যবস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এ সংকট মোকাবিলার মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ সরকার প্রতিনিয়ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সংসদ নেতা বলেন, কৃষি গবেষণা, সম্প্রসারণ ও কৃষি ক্ষেত্রে ধারাবাহিক উপকরণ ও নীতিসহায়তার ফলে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছে।

২০২৫ সালের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু : ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র ২০২৫ সালের মধ্যে চালু হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ তথ্য জানান।

২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বাজার হবে বাংলাদেশ : বাসস জানায়, রাজধানী ঢাকায় দুই দিনব্যাপী কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম-২০২৩-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সচ্ছল জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি।

ফলে জার্মানি ও যুক্তরাজ্যকে পেছনে ফেলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বাজারে পরিণত হবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে অন্যান্য দেশের সঙ্গে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের এ অঞ্চলের ৩ বিলিয়ন মানুষের বাজার পেতে বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান প্রায় ৩০০ কোটি মানুষের বাজারের কেন্দ্রস্থলে। এ ছাড়া আমাদের রয়েছে ১৭ কোটি মানুষ, যার বৃহৎ অংশ যুবসমাজ।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের সড়ক, রেল এবং আকাশ পথে যোগাযোগ উন্নত হচ্ছে। দেশের প্রায় সব মহাসড়ক চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করা হয়েছে বা হচ্ছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা সরাসরি রাজধানী ঢাকা এবং দেশের অন্য অঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। পদ্মা সেতু দিয়ে শিগগিরই ঢাকার সঙ্গে খুলনার রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে যা মোংলা বন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে। পাশাপাশি চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে শুধু বাংলাদেশেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল চালু হবে শিগগিরই।’ চট্টগ্রাম থেকে পর্যটন শহর কক্সবাজারে রেললাইন নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ঢাকায় গত বছর মেট্রোরেলের একাংশ এবং কয়েক দিন আগে দেশের প্রথম এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ উদ্বোধন করা হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এসব অবকাঠামোর পুরো অংশ চালু হলে ঢাকায় গণপরিবহন ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। ট্রাফিক জ্যামে আর কাউকে বসে থাকতে হবে না। কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিল (সিডব্লিউইআইসি), বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জেডআই ফাউন্ডেশন অংশীদারিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সিডব্লিউইআইসির চেয়ারম্যান লর্ড মারল্যান্ড, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া এবং স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজার অব কমনওয়েলথ কান্ট্রিজ অ্যান্ড বিয়ন্ড জিল্লুর হোসেন। দুই দিনব্যাপী ফোরামে বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা ১২টির বেশি সেশনে অংশ নিচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর