শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
বিক্ষোভ সমাবেশ

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন

আওয়ামী লীগ-বিএনপি পাল্টাপাল্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন

আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস ও সরকার পতনের একদফা দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, অবিলম্বে সংসদ বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। তারা বলেন, গত ১৫ বছরে সরকার গোটা রাষ্ট্রকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। গতকাল বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘দানবীয় সরকার’ মন্তব্য করে বলেন, আর কালবিলম্ব নয় এই সরকারের হাত থেকে মুক্তি পেতে এখনই সবাইকে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ডিসি-এসপিদের নিজেদের মতো সাজিয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যত পারো মামলা দাও। মামলা উপেক্ষা করে মানুষ রাজপথে নেমেছে।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে হাজার কোটি টাকা লুট হচ্ছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বিচার বিভাগ ধ্বংস হয়ে গেছে। বিএনপি মহাসচিব সরকারের উদ্দেশে বলেন, সাইবার সিকিউরিটি নামে আইন করে দেশের গণমাধ্যমের মুখ স্তব্ধ করতে পারলেও বিদেশি গণমাধ্যমের মুখ কীভাবে বন্ধ করবেন। গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে- বাংলাদেশের গণতন্ত্র বিলীনের পথে। লন্ডনের একটি গণমাধ্যমে বলেছে, বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন তলানিতে ঠেকেছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার জনগণকে বোকা বানাতে চায়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের ঘরে খাবার নেই। এদিকে সরকারের খেয়াল নেই। সরকারের খেয়াল একটাই কীভাবে ক্ষমতায় যেতে হবে। তিনি বলেন, অবিলম্বে সংসদ বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।

মির্জা আব্বাস বলেন, বর্তমান সরকার- সরকার নয়, এরা কর্তৃত্ববাদী। এরা গুম খুন সাজা দিয়ে দেশকে অস্থির রেখে লুটপাট করছে। জনগণকে কোনো তোয়াক্কা করে না। এদের ক্ষমতায় টিকে থাকার একমাত্র অস্ত্র পুলিশ আর কোর্ট। এরা যে কোনোভাবেই ক্ষমতায় থাকতে চায়।

ড. আবদুল মঈন খান বলেন, এ সরকারকে বিদায় নিতে হবে। বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল গণতন্ত্রের জন্য। গণতন্ত্রকে আওয়ামী লীগ সরকার হত্যা করেছে। এ সরকার গণতন্ত্র হরণ করে বাকশালি শাসন কায়েম করেছে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিশ্ব গণতন্ত্র দিবসে আজ বাংলাদেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও বাকস্বাধীনতা নেই। আজকে গণতন্ত্রের পক্ষে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমেছে। এ আন্দোলন বিএনপির আন্দোলন নয়, এ আন্দোলন দেশের ১৮ কোটি মানুষের আন্দোলন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল মিল্টন, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

সমাবেশ উপলক্ষে দুপুরের পর থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে হাতে বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্লেকার্ড ও নিজ সংগঠনের ব্যানার নিয়ে সমবেত হতে থাকেন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, শ্রমিক দল, মহিলা দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষকদল ও জাসাসসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী। দুপুরের আগে থেকেই দলের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমাবেশে নেতা-কর্মী বাড়তে থাকে। সমাবেশের কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হামিদুর রহমান হামিদ, ইরফান ইবনে আমান অমি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিকদলের আহ্বায়ক মো. সুমন ভূইয়া ও সদস্যসচিব বদরুল আলম সবুজ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, আতাউর রহমান চেয়ারম্যান, মহানগর বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন সরদারসহ নেতারা মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসেন। নয়াপল্টন এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিল। এদিকে বিএনপির সঙ্গে মিল রেখে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে একই কর্মসূচি পালন করেছে সমমনা দলগুলো।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর