বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শীর্ষ সন্ত্রাসীকে এলোপাতাড়ি গুলি, পথচারীসহ আহত ২

নিজস্ব প্রতিবেদক

শীর্ষ সন্ত্রাসীকে এলোপাতাড়ি গুলি, পথচারীসহ আহত ২

আহত পথচারী

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তারিক সাঈদ মামুনের প্রাইভেট কার লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এক মোটরসাইকেল আরোহী গুলিবিদ্ধ এবং এক পথচারী আহত হয়েছেন। আর সন্ত্রাসী মামুনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। কুপিয়ে ও গুলি করে আহত করার ঘটনায় আরেক ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ সানজিদুল ইসলাম ইমনের নাম সামনে এসেছে। সন্ত্রাসী ইমনের হুমকির পরই সোমবার দিবাগত রাতে এ গুলির ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর আহত তিনজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখান থেকে আহত পথচারী আরিফুল প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন।

মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অ্যাডভোকেট ভুবন চন্দ্র শীলকে রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। আর ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুনকে তার পরিবার রাতেই শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তিনি চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলা এবং সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাই শহীদ সাঈদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলার আসামি। গতকাল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তেজগাঁও বিজি প্রেস এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। গুলিতে দুই পথচারী আহত হয়েছেন। এ ছাড়া শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি সন্ত্রাসী মামুন। মগবাজার পিয়াসা বার থেকে ফেরার পথে তার মাইক্রোবাসে হামলা করা হয়। মামুন ২০ বছর জেল খেটে বের হয়েছেন। সন্ত্রাসী ইমন জেলে থাকাকালে মামুনকে হুমকি দিয়েছিলেন। ইমনের লোকজন মামুনের ওপর হামলা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। বিস্তারিত তদন্ত হচ্ছে।

এদিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরাই মামলা করবেন। পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচএম আজিমুল হক জানান, এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। আমরা তদন্তের পাশাপাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছি। এর আগে সোমবার রাত ১০টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের সিটি পেট্রলপাম্প ও বিজি প্রেসের মাঝামাঝি এলাকার মূল সড়কে এ গুলির ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী অ্যাডভোকেট ভুবন চন্দ্র শীল গুলিবিদ্ধ হন এবং পথচারী আরিফুল হক দুর্বৃত্তদের কোপে আহত হন। আর শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ভুবন চন্দ্র শীলের মাথায় গুলি লেগেছে। আহত অ্যাডভোকেট ভুবন চন্দ্র শীলের স্বজন জয়শ্রী রানী জানান, ভুবন চন্দ্র শীলের বাড়ি নোয়াখালীর মাইজদিতে। বর্তমানে মতিঝিলের আরামবাগে একটি মেসে থাকেন। তার পরিবার গ্রামের বাড়িতে থাকে। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। পুলিশ জানায়, হামলাকারীরা চারটি মোটরসাইকেলে এসে মামুনকে বহনকারী প্রাইভেটকার লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে এক মোটরসাইকেল আরোহী ও একজন পথচারী আহত হন। মামুন প্রাইভেটকার থেকে বের হয়ে পালানোর চেষ্টার সময় তাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন ও মামুন এক সময় ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকার আতঙ্ক ছিল। তাদের গড়ে তোলা বাহিনীর নাম ছিল ‘ইমন-মামুন’ বাহিনী। তারা দুজনই চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি। ইমন কারাগারে থাকলেও সম্প্রতি মামুন জামিনে বের হন। কারাগারে থাকা অবস্থাতেই দুজনের বিরোধ দেখা দেয়। ওই বিরোধের জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে ধারণা মামুনের। ঘটনার দিন মগবাজার এলাকার পিয়াসী বার থেকে বের হয়ে মামুন, খোকন ও মিঠু প্রাইভেটকারে শুক্রাবাদের বাসায় যাচ্ছিলেন। তেজগাঁও ঘটনাস্থলে চারটি মোটরসাইকেলে ৭-৮ জন সন্ত্রাসী মামুনকে লক্ষ্য করে গুলি করে। দ্রুত প্রাইভেটকার থেকে মামুন, খোকন ও মিঠু নেমে পড়েন। এ সময় সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মামুনের পিঠে, ঘাড়ে ও বাম হাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং আশপাশের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে।

সর্বশেষ খবর